নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মোদি জমানায় ‘নিরপেক্ষ’ সাংবাদিকতা ক্রমশ সোনার পাথরবাটি হয়ে উঠছে। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই পুলিশি নির্যাতন আর তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে সাংবাদিকদের। যার সর্বশেষ উদাহরণ ‘নিউজক্লিক’ অনলাইন পোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ। যিনি বিজেপি আর মোদি সরকারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কেন্দ্রের শাসকদের মুখোশ ফাঁস করে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবারই তাঁকে গ্রেফতার করেছে অমিত শাহের ‘পোষ্য ভৃত্য’ দিল্লি পুলিশ। শুধু তাই নয়, বিজেপি ঘনিষ্ঠ বিদেশি এক সংবাদমাধ্যমের গাঁজাখুরি প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে ওই অনলাইন পোর্টালের একাধিক সাংবাদিক-লেখকের বাড়িতেই তল্লাশি চালিয়ে দিল্লি পুলিশ। বাতিল করাস হয়েছে মোবাইল-ল্যাপটপ।
এবার পুলিশের জুলুমবাজির হাত থেকে বাঁচতে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিল প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া-সহ দেশের ১৮ সাংবাদিক সংগঠন। পুলিশের নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি অকারণে সাংবাদিকদের হেনস্তা বন্ধের দাবিও জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘দেশের সাংবাদিকদের একটা বড় অংশই হুমকির মুখে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিহিংসার মুখে পড়ার ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন তাঁরা।’
বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকদের তল্লাশি এবং তাদের পেশার অনততম অঙ্গ কোনও ইলেকট্রনিকস গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করা হয় না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের বিচার ব্যবস্থার কাছে সংবিধান রক্ষা করার যেহেতু গুরুদায়িত্ব রয়েছে এবং সবাই জবাবদিহির জন্য বাধ্যতামূলক, তাই এ বিষয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। সরকারের পছন্দসই খবর না করা হলেই যে হেনস্থার খড়গ নেমে আসছে, তাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তের নামে পুলিশের একাংশ আদালতে অসত্য দাবি করার পাশাপাশি আইনকে অপব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।