নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথমে বাংলা(Bengal), তারপর হিমাচল প্রদেশ, আর এবার কর্ণাটক(Karnataka)। ধাক্কা খেতে হয়েছে বিজেপিকে(BJP)। ধাক্কা খেতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে(Narendra Modi)। ধাক্কা খেতে হয়েছে অমিত শাহকেও(Amit Shah)। কার্যত ধাক্কা খেয়েছে মোদি-শাহের শাসন যা কায়েক হয়েছে শুধু দেশের অন্দরেই নয়, বিজেপির অন্দরেও। সেই শাসন এবার প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল। কেননা মোদি ও শাহ দুইজনই বাংলা ও কর্ণাটককে পাখির চোখ করেছিলেন জয়ের মুখ দেখার জন্য। নিত্যদিন ডেইলি প্যাসেঞ্জারি, গুচ্ছের সভা আর র্যালি, সঙ্গে বিদ্বেষ ভাষণ, সংখ্যালঘু বিরোধী বার্তা, বিভাজনের রাজনীতি। এই ফর্মুলাকেই সবার আগে ধাক্কা দিয়েছে বাংলা। এবার দিল কর্ণাটক। এই হারের দায় তাই মোদি ও শাহ কেউই অস্বীকার করতে পারেন না। আর সেই কারণেই বিজেপির অন্দরেও এবার মোদি-শাহ বিরোধী স্বর প্রকট হতে চলেছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন কর্ণাটকে জিতেও মমতার কাছে ব্রাত্যই থেকে গেল কংগ্রেস
সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেন যে অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আডবানীর বিজেপি আমূল বদলে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের হাতে। তিল তিল করে বাজপেয়ী ও আডবানী যে NDA গড়ে তুলেছিলেন, কংগ্রেসের একটা বিকল্প মঞ্চ গড়ে তুলেছিলেন আঞ্চলিক দলগুলিকে তুলে ধরে, সেই জোট মঞ্চ NDA-কেই চূড়ান্ত ভাবে বিসর্জন দিয়ে বসে আছেন মোদি আর শাহ। তাঁদের সর্বগ্রাসী রাজনীতি আজ বিজেপিকে মিত্রহীণ অবস্থায় শুধু এনে দাঁড় করিয়েছে তাই নয়, যে ভাবে শিবসেনার অধিকারসত্ত্বও বিজেপি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে তা দেখে আগামী দিনে আর কোনও আঞ্চলিক দল বিজেপির হাত ধরবে কিনা সন্দেহ। বাজপায়ী ও আডবানীর আমলে বিজেপিতে একটা খোলা হাওয়া ছিল। সব নেতারাই তাঁদের নিজ নিজ বক্তব্য রাখতে পারতেন। নিজ নিজ অভিমত তুলে ধরতে পারতেন। মোদি জমানায় তা কার্যত রুদ্ধ হয়েছে। দলের নেতারা এখন আর তাঁদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরতে পারেন না। যারা তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের হয় দলে কোনঠাসা করে দেওয়া হয়েছে নাহয় অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন কন্নড়ভূমির রায়ে বঙ্গের রাজনীতিতেও কোনঠাসা বিজেপি
দলের অন্দরে এই যে ক্ষোভ বিক্ষোভ এতদিন চোখ রাঙিয়ে মোদি আর শাহ দাবিয়ে রেখেছিলেন, সেই শাসন আর কর্তৃত্ব কর্ণাটকের হারের পরে প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে বাধ্য। মোদিকেও যে হারানো যায়, মোদির চোখে চোখে রেখেও যে জয় ছিনিয়ে আনা যায় সেটা একা বাংলা নয়, কর্ণাটকও করে দেখাল। স্বাভাবিক ভাবেই মোদি ও শাহকে ঘিরে যে ভয় বিজেপির অন্দরে জমাট বেঁধেছিল তা এবার গলতে শুরু করে দেবে। কারও আর দায় পড়ে যাবে না, দলে টিকে ঠাকার জন্য মোদি-শাহ ভজনা করতে। কেননা মোদি-শাহ দুইজনের গদিটাই তো এখন টালমাটাল করতে শুরু করে দিয়েছে। এবার বরঞ্চ সঙ্ঘকে(RSS) ভাবতে হবে, খুঁজতে হবে, নতুন মুখ। ২০২৪’র ভোটে দলের হারের পরে আগামী দিনে কে হবেন দলের মুখ? তবে কর্ণাটকে দলের হারে খুশি হয়েছেন একজন। হতেই পারে সেই যোগীই(Yogi Adityanath) আগামীদিনে বিজেপির নয়া মুখ।