নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নির্বাচনী বন্ড তথ্য প্রকাশ নিয়ে আদালত অবমাননার দায়ে জেলে যেতে হতে পারে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান দীনেশ খেরাকে। সর্বাধিক ৬ মাসের জেল এবং ২,০০০ টাকা জরিমানার শাস্তি পেতে পারেন তিনি। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। অন্যদিকে, ব্যাঙ্কের সুনাম নষ্ট করায় চেয়ারম্যানের পদ থেকে দীনেশ খেরার ইস্তফা চেয়ে সরব হয়েছে মহারাষ্ট্র স্টেট ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন।
মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ধূমকেতুর গতিতে উত্থান ঘটেছিল দীনেশ খারার। ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ হওয়ার সুবাদে ২০১৬ সালে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মৃ্যানেজিং ডিরেক্টর পদ হাসিল করেন তিনি। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর চেয়ারম্যানে পদে বসেন। প্রথমে তিন বছরের জন্য তাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দলের ‘আশীর্বাদধন্য’ হওয়ার সুবাদে গত বছরের ৫ অক্টোবর ফে্র চেয়ারম্যান পদে মেয়াদ বাড়ানো হয় খেরার। আগামী ২৮ অগস্ট পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব সামলাবেন তিনি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে ৬ মার্চঢ পর্যন্ত সময়াসীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমা পেরনোর ঠিক ৪৮ ঘন্টা আগে দেশের এক নম্বর বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের তরফে শীর্ষ আদালতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন জানানো হয়। কংগ্রে্স-সহ বিরোধী দলগুলির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, বিজেপিকে কারা বন্ডের আড়ালে হাজার-হাজার কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে সেই তথ্য ধামাচাপা দিতেই বাড়তি সময় চেয়েছে এসবিআই। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞরাও এসবিআইয়ের বাড়তি সময় চাওয়ার পিছনে ‘অসৎ অভিসন্ধি’ দেখতে পেয়েছিলেন। গত সোমবার শীর্ষ আদালত অবশ্য এসবিআইয়ের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ নিয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় আদালত অবমাননার মামলা দায়েরেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। শীর্ষ আদালতের হুঁশিয়ারির পরেও নির্বাচনী বন্ড নিয়ে তথ্য প্রকাশে যে চালাকি করেছে এসবিআই, তা আদালত অবমাননার সামিল বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। যে সংস্থার আর্জির প্রেক্ষিতে বন্ড তথ্য প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত, সেই এডিআরের তরফে ফের এসবিআইয়ের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আর্জি জানানো হচ্ছে।