নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনায় স্বজনহারা হয়েছেন যারা, তাঁদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা সুপ্রিম কোর্টকে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। এবার কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তই পেল সুপ্রিম মান্যতা। সোমবার কেন্দ্রের রাস্তা অনুসরণ করেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের ঘাড়েই ক্ষতিপূরণের যাবতীয় দায় দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে করোনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের যে সিদ্ধান্ত তাতে মান্যতা দিল।
এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম আর শাহের নেতৃত্বাধীন একটি ডিভিশন বেঞ্চ ঘোষণা করে, যদি কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্রে উল্লেখ থাকে যে ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তাহলে রাজ্য ওই মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। দেশের কোনও রাজ্যই তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করতে পারবে না। এই ক্ষতিপূরণ সোমবার পর্যন্ত যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারের পাশাপাশি আগামী দিনে যদি কেউ করোনায় মারা যান তাঁদের পরিবারও পাবেন। এক্ষেত্রে যদি কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্রে করোনার উল্লেখ না থাকে তাহলে তাঁদের সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জেলা কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, মৃতের পরিবারের আবেদন করার ৩০ দিনের মধ্যেই ওই ক্ষতিপূরণের তাইকা তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, এই ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত একটি যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্মিলিত একটি বিজ্ঞপ্তি দেশের সমস্ত সংবাদমাধ্যম মারফত প্রচার করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হন এবং এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন। এই কাজের জন্য জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩০ জুন সুপ্রিম কোর্ট করোনায় মৃতদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে একটি গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দেয়। এরপর গত মাসে কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয় প্রতিটি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে করোনায় স্বজনহারাদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ বিষয়ক যে গাইডলাইনটি প্রকাশ করা হয় কেন্দ্রের তরফ থেকে তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল সর্বোচ্চ আদালত।
কীভাবে মিলবে ক্ষতিপূরণের টাকা? এই প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, মৃতদের পরিবারকে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে গিয়ে মৃতের শংসাপত্র, নির্দিষ্ট কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য, সঙ্গে করোনার নথি জমা দিতে হবে। জমা দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই রাজ্য সরকারকে টাকা পাঠাতে হবে মৃত ওই ব্যক্তির পরিবারকে। এক্ষেত্রে কারোর কাছে যদি এই সমস্ত নথি না থাকে তাহলে তিনি জেলা কমিটিকে বিষয়টি জানালে তাঁরা মৃত ওই ব্যক্তি সত্যিই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি যদি কোনও কারণে কারোর আবেদন বাতিল হয় তাহলেও সেটাও ৩০ দিনের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হবে।