নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির(School Recruiting Scam) ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) স্পেশ্যাল ডিভিশন বেঞ্চ স্কুল সার্ভিস কমিশনের(SSC) ২০১৬ সালের ৪টি প্যানেল বাতিল করে দেয়। তার জেরে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ চাকরি হারান। একই সঙ্গে আদালত প্যানেলের মেয়াদের বাইরে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ সহ বেতনের টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। পাশপাশি সিবিআইকে এই নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য ও ছাড়পত্র দেয়। সেখানেই আদালত বলেছিল, প্রয়োজনে রাজ্য মন্ত্রিসভার যারা অতিরিক্ত পদ তৈরি করে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করার ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু এই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও চাকরিহারারা। সেই মামলাতেই শুনানি পর্বে সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court) আগেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। গত ৭ মে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ থাকছে। যদিও সিবিআই তাঁদের তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেম কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না। এদিন এই রায় নিয়ে নতুন করে মুখ খুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)।
সুপ্রিম কোর্টের ৭ তারিখের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ অনুযায়ী, আপাতত কারও চাকরি যাচ্ছে না। এখনই কারও বেতন ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে প্রত্যেক চাকরিহারাকে লিখিত হলফনামা দিতে হবে যে আগামী দিনে এই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের জেরে যাদের চাকরি যাবে তাঁরা ২০২৪ সালের ৭ মে’র পরবর্তীকালে পাওয়া বেতন রাজ্য সরকারকে ফেরত দেবে। এই সুপ্রিম নির্দেশে সব থে এবড় স্বস্তি নেমে এসেছে তৃণমূলের অন্দরে, রাজ্য সরকারের অন্দরে। গত মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির পর্যবেক্ষণে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সাফ মন্তব্য, ‘কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য—এখনই আলাদা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এভাবে একলপ্তে একজনের চাকরি বাতিল হতে পারে না।’ গ্রীষ্মাবকাশের পর আগামী ১৬ জুলাই মামলার পরবর্তী এবং চূড়ান্ত শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত সকালের চাকরি বহাল থাকছে। শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তকে সেদিনই স্বাগত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বিষয়টি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিন অর্থাৎ ৯ মে সেই রায় নিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, ‘বিজেপি(BJP) বলেছিল এসএসসি নিয়ে বোম ফেলব। তৃণমূল বেসামাল হবে। মানুষের চাকরি খাওয়ার যে ষড়যন্ত্র, সেই বেলুনে আলপিন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্ট যে অর্ডার দিয়েছিলেন, ২৫ হাজার জনের চাকরি বাতিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আমরা মনে করি এখনও বিচারব্যবস্থায় মেরুদণ্ড সোজা রাখা লোকজন রয়েছে বলে দেশটা বেঁচে রয়েছে।’