নিজস্ব প্রতিনিধি: পূর্ব ঘোষণা মতো সোমবার গান্ধি জয়ন্তীর দিনে দিল্লির(New Delhi) রাজঘাটে(Rajghat) জাতির জনক মহাত্মা গান্ধিকে(Mahatma Gandhi) শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের ধর্না কর্মসূচী শুরু করল বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। নেতৃত্বে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। আছেন দলের সব সাংসদ ও বিধায়কেরা। আছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা এবং অবশ্যই বঞ্চিত বাংলার মানুষেরা। রবিবারই তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, তাদের লড়াই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া আদায় নিয়ে। এই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে গান্ধিজির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণেই এদিন গান্ধিজির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেই প্রথম দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল।
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য নেতারা রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধি শ্রদ্ধা জানান। তারপর দুপুর দেড়টা থেকে প্ল্যাকার্ড হাতে শুরু হয় তৃণমূলের ধর্না। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বাসে করে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক এবং একশো দিনের কাজের ‘বঞ্চিত’ জব কার্ড হোল্ডাররা। রয়েছেন আবাস যোজনার ‘বঞ্চিত’ উপভোক্তারাও। দলের তরফে এঁদের প্রত্যেককেই অম্বেডকর ভবনে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালেই আবার সেই অম্বেডকর ভবনে পৌঁছে যায় দিল্লি পুলিশের একটি দল। ক’টি বাস এসেছে, ক’টি বাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে, দিল্লিতে আসা কর্মীসমর্থকদের দেখভালের দায়িত্বে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেয় পুলিশ। পুলিশের এই ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। কেননা দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন, যে মন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলান নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভা ‘নম্বর টু’ অমিত শাহ। তাই এই ‘সক্রিয়তা’র নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
তবে অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’র জবাব গান্ধীগিরির মাধ্যমেই দিতে চায় জোড়াফুল শিবির। অভিষেক এদিন সকালে ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘মহাত্মা গান্ধির অহিংস পথেই চলতে চান তাঁরা। তবে মহাত্মার বিচার এবং সমানাধিকারের দাবিতে যে লড়াই, তাঁকেও অনুসরণ করা হবে।’ মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ‘বঞ্চনা’কে সামনে রেখে যে লড়াইয়ের বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল, তাকে অহিংস পথেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চান অভিষেক। এদিন তৃণমূলের এই ধর্না কর্মসূচীর জন্য রাজঘাট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রাজঘাটে এমনিতেই কড়া পুলিশি প্রহরা থাকে। সোমবার গান্ধি জয়ন্তী হওয়ার কারণে সকাল থেকেই সেখানে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাতে যান রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। তার ওপর সেখানে তৃণমূলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে। রাজঘাটে অভিষেকের আগেই সেখানে উপস্থিত হন তৃণমূলের অন্য নেতারা। সাংসদদের সঙ্গে সেখানে বসে পড়ে ধর্না চালাচ্ছেন অভিষেক। হাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দ্রুত মঞ্জুর করার দাবি সংবলিত পোস্টার।