নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্তমানে গতবছর থেকে চলমান ইজরায়েল-হামাসের বিধ্বংসী যুদ্ধে জেরবার গোটা বিশ্ব। ফিলিস্তিনি অধিনস্থ গাজা উপত্যকাকে কেন্দ্র করেই যুদ্ধ বেঁধেছে দুই দেশের। গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধে পরতে পরতে ফুটে উঠছে হিংস্রতা। ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি। গাজায় বাস্তু হারা হয়েছেন প্রায় ১৭ লাখ মানুষ। তবে এই যুদ্ধে বলি হয়েছে বেশীরভাগ শিশু এবং নারীরা। ইজরায়েলরা ভয়ানকভাবে তাণ্ডব চালাচ্ছে, এই মুহূর্তে তাঁরা ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ মিশরের রাফা থেকে সরে যাওয়ারও দিয়েছে। বন্দিদের মধ্যে পুরুষদের রীতিমতো যৌন হেনস্থা থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক শক দিয়ে ব্যপক অত্যাচার চালানো হচ্ছে তাঁদের উপর।
তবে এই যুদ্ধে কেউ ইজরায়েলকে সমর্থন করছে আবার কেউ ফিলিস্তিনিকে সমর্থন করছে। এবার সেই সমর্থনের মর্ম যে এতটা ভয়ানক হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেননি পারভীন শেখ। যিনি মুম্বইয়ের শীর্ষ বিদ্যালয় সোমাইয়া স্কুলের অধ্যক্ষা ছিলেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থী পোস্টে লাইক দেওয়ার জন্য তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে “হামাসপন্থী, ইসলামপন্থী, এবং হিন্দু-বিরোধী” মতামতকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এবং তিনি এই সম্পর্কিত সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকি গাজায় ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের একাধিক পোস্ট তিনি লাইক দিয়েছেন৷ তাই তাঁকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই পদক্ষেপটি “আমাদের ঐক্য এবং অন্তর্ভুক্তির নীতির সঙ্গে আপস করা হয় না তা নিশ্চিত করার জন্য এই সিদ্ধান্ত”। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে, শহরের বিদ্যাবিহার এলাকার সোমাইয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “এটা আমাদের নজরে এসেছে যে পারভীন শেখের সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপগুলি আমাদের মতের বিরোধী। এই উদ্বেগের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনা পারভীন শেখের সমিতি বন্ধ করে দিয়েছে। অবশ্যই এটি দৃঢ়ভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করে। তবে এটি দায়িত্বের সঙ্গে প্রয়োগ করা উচিত।” তবে স্কুলের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পারভীন শেখ তাঁর “বরখাস্ত”কে “সম্পূর্ণ বেআইনি, কঠোর এবং অযৌক্তিক” হিসাবে দাবি করেছেন। এবং এটিকে “রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, “একজন স্কুলের অধ্যক্ষ হিসাবে আমার কাজ ব্যতিক্রমী ছিল এবং এই কারণে আমার পদত্যাগ করা অন্যায়। এই পদক্ষেপটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে। আমি আমাদের আইনি ব্যবস্থা এবং ভারতীয় সংবিধানে দৃঢ় বিশ্বাস রাখি এবং আমি বর্তমানে আমার আইনি বিকল্পগুলি বিবেচনা করছি।” গত সপ্তাহে, স্কুল ব্যবস্থাপনা শেখের কাছ থেকে তাঁর এমন কাণ্ডের জন্যে তাঁর কাছে একটি লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছে। শেখ ১২ বছর ধরে ওই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সাত বছর আগে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুসারে শিক্ষা ক্ষেত্রে শেখের ৩০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার দক্ষতা প্রি-সার্ভিস এবং ইন-সার্ভিস শিক্ষকদের কোচিং, মেন্টরিং, পেশাগত উন্নয়ন, পাঠ্যক্রম ডিজাইন এবং কার্যকর ক্লাসরুম লেআউটে।