নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর মানে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করা। এমনটাই মত মুসলিমদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন জমিয়তে উলেমা হিন্দের। ফলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংগটনের পদাধিকারীরা। যদিও রাস্তায় নেমে হিংসাত্মক আন্দোলনের পথে যাওয হবে না। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মোদি সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন রুখে দেওয়া হবে বলে সোমবার সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
সামনের বছর দেশে লোকসভা ভোট। আর ওই ভোটে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড ঘরে তুলতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। গত ১৪ জুন আচমকাই ২২তম আইন কমিশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু হবে কিনা তা নিয়ে ধর্মীয় সংগঠন ও সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিজেদের মতামত বা পরামর্শ জানাতে পারবেন সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে ধর্মীয় সংগঠনগুলি। আচমকাই আইন কমিশনের এমন তৎপরতার পিছনে গোপন রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ খুঁজে পেয়েছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হল সকলের জন্য এক আইন, যা সারা দেশের সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও লাগু হবে। এর মধ্যে রয়েছে, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক প্রভৃতি। সংবিধানের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, ভারতের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। পর্তুগিজ শাসনের অবসানের পরে শুধুমাত্র গোয়াতেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু রয়েছে। বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর দাবি তোলা হয়েছে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আইন কমিশনের জনমত সংগ্রহের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জমিয়তে উলেমা হিন্দের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু সংবিধানের ২৫ ও ২৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী ধর্মীয় ও মৌলিক অধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সব ধর্মের জন্য একই আইন চালু মানে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করা।ফলে এমন সর্বনাশা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ চলবে।’