নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতিতে যত বাজেট ছাঁটছে পুজো উদ্য়োক্তারা, ততই অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। করোনাকালের আগে, প্রতি বছরই রাজ্য় ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশের মানুষ চমকে যেতেন এখানকার আলোকসজ্জার কারুকার্য দেখে। ফলে নতুন নতুন চমৎকার দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন উৎসবমুখী জনতা।
কিন্তু তাতে ভাটা পড়েছে বিগত দুই বছরে। আসলে চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের পথের কাঁটা এখন করোনা-পরিস্থিতি। আজও তাঁদের চমকে দেওয়ার মতো ভাবনা আছে, নতুন কিছু করার পরিকল্পনা আছে, আর সেগুলি আলোর মাধ্য়মে ফুটিয়ে তোলার জন্য় উদ্য়োগও আছে। কিন্তু যা নেই তা হল চাহিদা। ফলে এই উৎসবের মুখেও তাঁদের জীবনে কার্যত অন্ধকার।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাঙা পায়ে খেলা হবে থেকে অলিম্পিকে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিন থ্রো। জো বাইডেনের রাষ্ট্রপতি হওয়া থেকে কাবুলের পতন। সুক্ষ্ণ আলোর ঝলকানিতে ফুটিয়ে তোলা শুধু সময়ের অপেক্ষা চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের। চন্দননগরের তালডাঙা, বিদ্যালঙ্কা, পঞ্চাননতলা জুড়ে আলোক শিল্পীদের একেকটি কারখানায় এখন শুধুই হাহাকার।
পুজোর আর দশ-বারো দিন বাকি। কিন্তু এখনও ঠিকঠাক বায়না নেই। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আর হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা, সব মিলিয়ে পুজো উদ্য়োক্তারা এখনই পুজোর আড়ম্বরে রাশ টেনেছেন। ফলে ‘দুয়ারে সরকার’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘স্বাস্থ্য সাথী’-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প আলোক-বোর্ডে ফুটিয়ে তোলার পরিকল্পনাও এখন বিশ বাও জলে।
চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের অনেকেই বলছেন, এবারও সেভাবে বায়না নেই। কিন্তু এবার করোনা টিকার হার অনেকটাই বেশি হওয়ায় তাঁরা আশা করেছিলেন পুজো জাকজমকেই করা হবে। কিন্তু পুজো উদ্য়োক্তারা অনেকেই সরকারের দেওয়া অনুদানের টাকায় পুজো সেরে ফেলতে চাইছেন। এর সঙ্গে দোসর হয়েছে আবহাওয়া। পুজোর আর ১০-১২ দিন বাকি, কিন্তু লাগাতার নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্তে বৃষ্টি থামার নাম নেই।
ফলে পুজো একটু বড় করার চিন্তাভাবনা যারা করেছিলেন, তাঁরাও পিছিয়ে আসছেন। বাজেট কমিয়ে পুজো করছে অনেক বারোয়ারি। আবার বৃষ্টির জেরে থিমের পুজো থেকে সরে আসছেন অনেকে। তাই এ বছরও চন্দননগরের আলোর বরাত খুবই কম। ফলে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের মতো এখানকার আলোকশিল্পীদের কপালে ক্রমশ গভীর হচ্ছে চিন্তার নিম্নচাপ।