নিজস্ব প্রতিনিধি: রাত পোহালেই আগামিকাল ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi)। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, প্রতি বছর কালীপুজোর (Kali Puja) আগের দিন মানা হয় ভূত চতুর্দশী। কিন্তু কথা হল, এদিন ভূত চতুর্দশী কেন মানা হয়, এবং এদিন ১৪ শাক কেন খেতে হয়? সাধারণের বিশ্বাস ভূতপ্রেতদের দূরে রাখতেই এদিন ১৪ শাক খেয়ে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১৪ ফোঁটা দিয়ে এই উৎসব পালিত হয়। কিন্তু কেন পালন করা হয় ভূত চতুর্দশী? কেনই বা কালীপুজোর আগের রাতেই এই রীতি পালন করার রেওয়াজ? তবে কী সত্যই ভূত-প্রেত নেমে আসেন পৃথিবীতে এসময়? তবে এই কথার উত্তরে একজন জ্যোতিষবিদ বলেছেন, পৃথিবী, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ নিয়ে পঞ্চভূত। আর মানবদেহ এই পঞ্চভূতের সমন্বয়েই তৈরি।
মানুষের মৃত্যুর পর দেহ আবার এই পঞ্চভূতেই মিলিয়ে যায়। তাই ভূত চতুর্দশীতে পৃথিবী, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ- এই পঞ্চভূতকে সম্মান জানানো হয়। এই প্রথাই যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু কালীপুজোর ঠিক আগেই কেন এই রীতি পালিত হয়? আসলে শাস্ত্রে ১৪ সংখ্যাটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। ঊর্ধ্বলোকের সপ্তলোক অর্থাৎ সপ্তস্বর্গ, ভূঃ ভুবঃ স্বঃ জনঃ মহঃ তপঃ সত্য। অর্থাৎ পাতালের দিকে তাকালে, সপ্তলোক পরিস্ফূটিত হবে। অতল লোক, বিতললোক, সুতললোক, তলাতললোক, মহাতললোক, রসাতললোক, পাতাললোক। এই দুই সাত মিলিয়ে চোদ্দ। এই চোদ্দলোকে যেখানে যেখানে জীবের অবস্থান বোঝাতেই ১৪ বাতি দেওয়া, যাঁরা তাঁরা আলোকিত হয়।
আবার গণিতের ভাষায়, ৯ ও ৫ যুক্ত করলে হয় ১৪। দুই চোখ, দুই নাসিকা ছিদ্র, দুই কান, এক মুখ গহ্বর, পায়ুদ্বার, লিঙ্গ। আর সেই সঙ্গে পঞ্চভূত। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরূত্ ও ব্যোম। মানবশরীরের এই দিকগুলিকে জাগ্রত করার প্রতীক হিসেবেও ১৪ দীপ জ্বালানো হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে ১৪ শাকের বিধান কী বলছে, আসলে, শাক এমন একটি জিনিস, যা সব জায়গায় জন্মায়। তাই ১৪ শাকের মাধ্যমে ১৪ লোকের সব জীবরা যেন শাকে-ভাতে থাকতে পারে সেটাই প্রার্থনা করা হয়। আর এই ১৪ শাকের মধ্যে কোনগুলি খেতে হবে- ওল , ভাটপাতা, কেঁউ, শৌলফ, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিঞ্চে, জয়ন্তী।