নিজস্ব প্রতিনিধি, বালুরঘাট: ক্লাস সেভেনের ছাত্র, কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনাতেও চাপ নেই তেমন। এদিকে করোনা পরিস্থিতে মা-বাবাও বাড়ির বাইরে বেরোতে দেয় না। কিন্তু সারাদিন বাড়িতে বসে কী করবে সে? অনেক ভেবে শেষে কূল পেল রৌণক কুণ্ডু। শুরু করে দিল দুর্গাঠাকুর তৈরির কাজ। চতুর্থীতে শেষ হল প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন পুজোর আয়োজন শুরু হয়েছে বাড়িতেই।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের রবীন্দ্র নগরের বাসিন্দা কুণ্ডু পরিবার। পরিবারের সদস্যরা জানান, আগে দুর্গাপুজোর যে উন্মাদনা ছিল বর্তমানে আর নেই। বরং গতবছর থেকে আরও যেন ফিকে হয়ে গিয়েছে। প্য়ান্ডেল হপিং করা তো দূর, পাড়ার পুজোতেই ভিড় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বেরোচ্ছেন না তাঁরা। বাড়ির ছোট ছেলে বছর বারোর রৌণকেরও তাই মন খারাপ। তবে গতবছরের মতোই এবারও যেন পুজোর দিনগুলিতে ঘরে বসে টিভি দেখে সময় কাটাতে না হয়, তার জন্য আগেভাগে পরিকল্পনা করে রেখেছিল সে।
লকডাউন থেকেই শুরু করেছিল খড়ের কাঠামো তৈরি করা, মাটি ছানা। তারপর থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে তার খুদে হাতে দেবী দুর্গার রূপ পায় ওই কাঠামো। রৌণক বলল, ‘করোনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। লকডাউনের বাইরে বেরনোরও উপায় ছিল না। তাই দুর্গাঠাকুর বানানো শুরু করি।’ কিন্তু কোথা থেকে অনুপ্রাণিত হল সে? উত্তরে রৌণক জানায়, পাড়ার দুর্গামণ্ডপে ঠাকুর তৈরি করতে দেখেছে। ঠাকুর তৈরিতে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে তাঁর। কিন্তু পূর্বপুরুষরাও কোনওদিন মাটির প্রতিমা তৈরি করেনি। কিন্তু তাতে কী, আগ্রহ আর ইচ্ছে নিয়ে চেষ্টা করে গিয়েছে সে। চতুর্থীতে সম্পন্ন হস প্রতিমা তৈরির কাজ। পরিবারের সদস্যরা জানান, এবছর আর মনমরা হয়ে ঘরে বসে থাকতে হবে না। বরং বাড়িতেই পুজোর আয়োজন করছেন তাঁরা।