এই মুহূর্তে




Durga Puja : আসলে কলাবউ কী? যুক্তি দিয়ে জানুন আর ভক্তি ভরে মানুন




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায়: “রম্ভা কচ্চী হরিদ্রাচ জয়ন্তী বিল্ব দাড়িমৌ।

                                       অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা।”

 

দুর্গাপূজায় কলাবউ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  সপ্তমীর ভোর বেলায় বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে পূজা ব্যবস্থাপণার কর্মীসহ পুরুতমশাইরা ঘাটে যান কলাবউ স্নান করানোর জন্য। তারপর হয় মহাস্নান। উষ্ণ জল, পুকুরের জল, শিশিরের জল, ফুলের জল বা পুষ্পজল, সমুদ্রজল, সুগন্ধি জল, রত্নখচিত জল, তিলতেলযুক্ত জল ইত্যাদি নয় রকম জলে সারা হয় মহাস্নান। তারপর আবার কলাবউকে শাড়ি পড়িয়ে স্থাপন করা হয় ঠিক গণেশের পাশে। তাহলে কি কলাবউ গণেশের বউ ? না, না , একদমই না। আবার, কলাবউ স্নানের বিষয়ে অনেকে মন্তব্য করে থাকেন, অবিবাহিতদের কলাবউ স্নান করাতে হয়। তাহলে কি বিবাহিতরা কলাবউ স্নান করালে আবার বিয়ে হবার সম্ভাবনা থাকে ? না, না, এও সঠিক তথ্য না।

তাহলে কি এই কলা বউ ?

বলাই বাহুল্য, আমরা নবপত্রিকাকে গতানুগতিক ভাবে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী কলাবউ বানিয়ে নিয়েছি। আসলে কলাবউ গণেশের স্ত্রী তো নয়ই, বরং কলাবউ প্রকৃতপক্ষে গণেশ জননী। বলা হয়ে থাকে, দেবী দুর্গার নব রূপের প্রতীকরূপে কল্পিত হয় ন’টি উদ্ভিদ, যেগুলিকে একত্রিত করে বেঁধে তৈরী হয় নবপত্রিকা। তাই এর সঙ্গে কোনও বউ ও বিবাহিত-অবিবাহিতের যোগসূত্র নেই। তবে এটা বলা যেতে পারে যে, নবপত্রিকাকে স্নানের পর শাড়ি পড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে সিঁদুর পড়ানো হলে একজন রমণীর মত দেখায় বলেই তাঁকে কলাবউ বলে।

নবপত্রিকার নয়টি উদ্ভিদ হল :

  • কদলী বা রম্ভা (কলা গাছ): কদলি গাছ এর অধিষ্টাত্রী দেবী ব্রহ্মাণী;
  • কচু (সাধারন): কচু গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী কালিকা;
  • হরিদ্রা (হলুদ গাছ): হরিদ্রা গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী উমা;
  • জয়ন্তী: জয়ন্তী গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী কার্তিকী;
  • বিল্ব (বেল গাছ): বিল্ব গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী শিবা;
  • দাড়িম্ব (ডালিম/বেদানা গাছ): দাড়িম্ব গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী রক্তদন্তিকা;
  • অশোক: অশোক গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী শোকরহিতা;
  • মানকচু: মানকচু গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী চামুণ্ডা;
  • ধান: ধান গাছের অধিষ্টাত্রী দেবী লক্ষ্মী।

নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। এই নয়টি উদ্ভিদের নেপথ্যে একটি খুব সুন্দর বৈজ্ঞানিক যুক্তিও রয়েছে।  নবপত্রিকার প্রধান গাছ হল কলাগাছ, যা হল ‘ফার্টিলিটি’ আর ‘ভেজিটেশনের’ প্রতীক। আবার কচু আশ্বিনের একদম প্রথমে হয়।  আবার একই ধরনের আর একটি আনাজ মানকচু। শরতের মনোরম রোদ্দুর পেলে মানকচুও খুব সুস্বাদু হয়। নবপত্রিকায় ফলের মধ্য আছে আছে বেল ও দাড়িম্ব অর্থাৎ ডালিম। বেলপাতা শিব এবং পার্বতীর সবচেয়ে প্রিয়। ডালিম আশ্বিন মাস থেকে অঘ্রান মাস পর্যন্ত খুব ভাল ফলে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে বা শরীর দুর্বল হলে ডালিম দারুন কার্যকরী।  এছাড়া আছে জয়ন্তী এবং অশোক গাছ। জানা যায়, এই দুটি বৃক্ষই আয়ুর্বেদের মহৌষধের কাজ করে।  আর অপর দিকে জয়ন্তী তো দুর্গার একটি নাম। এর বীজ  স্ত্রীরোগ নিরাময়ের কাজে লাগে। এরও ফলন হয় আশ্বিনের শেষে। এছাড়া আছে হলুদ। কাঁচা হলুদ থেকে পাকা হলুদ শরীরের পক্ষে যেমন ভাল, তেমন বহু পুজো উপাচারেও ব্যবহৃত হয়। এর থেকেই খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে এই সকল উদ্ভিদের পাতার সমন্বয়েই গঠিত নবপত্রিকা, যিনি আদতে শষ্যের দেবী। 

এই ন’টি উদ্ভিদ একত্রে নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা নামে “নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ” মন্ত্রে পূজিতা হন।

রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা,

দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী ।।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দশমীতে ইছামতীর তীরে জমজমাট এক দিনের বউ মেলা, তবে নিষিদ্ধ পুরুষ ক্রেতা

ফরিদপুরে একই মণ্ডপে ২৫১ দুর্গা প্রতিমা দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়

পুজো শেষে দুপুরে জমিয়ে খান ওল-চিংড়ি: সহজ রেসিপিতে রসনা তৃপ্তি করুন ঘরেই

মুম্বইতে দুর্গার বিদায় পর্বে জমিয়ে সিঁদুর খেললেন রানি-কাজলরা

৩০০ বছর ধরে সিংহবাহিনী দেবী রূপে পুজিতা হয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে

পান্তা ভাত-কচু শাক খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন এই বনেদি বাড়ির উমা

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর