নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে রবিবার সকাল থেকে কলকাতা পুরনিগমের ভোটগ্রহন শুরু হয়েছে। হাড় কাঁপানো শীতের সকালে ভোটগ্রহন কেন্দ্রের সামনে লাইন কম থাকলেও কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনায় ভোটের বাজার গরম হয়ে উঠেছে। ভুয়ো ভোটার থেকে শুরু করে ভোটগ্রহন কেন্দ্রের বাইরে বোমাবাজি, প্রার্থীকে মারধোরের অভিযোগ-সহ জাকারিয়া স্ট্রিটে শাড়ির গুদামে আগুনের ঘটনায় জমে উঠেছে পুরভোট। তবে বাকি এলাকায় ভোটগ্রহন চলছে শান্তিপূর্ণভাবেই। সকাল ৯টা পর্যন্ত কলকাতায় ভোটগ্রহণের হার ৯.০৭ শতাংশ।
কলকাতা পুরভোটে অশান্তি ঠেকাতে আটঘাঁট বেঁধে নেমেছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতায় ঢোকার সমস্ত এন্ট্রি পয়েন্টে চলছে কড়া নজরদারি। বহু জায়গায় চলছে নাকা চেকিং। কলকাতায় ঢোকার বৈধ কাগজ এবং কারণ দর্শাতে না পারলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাড়ি। পাশাপাশি লালবাজারে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পুলিশ। ফোন করে সরাসরি কন্ট্রোল রুমে জানানো যাচ্ছে অভিযোগ। তবে এদিন ভোট শুরুর পর থেকেই বুধে সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ে ভুড়িভুড়ি অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। অভিযোগ, কয়েকটি ওয়ার্ডের একাধিক বুথে বসানোই হয়নি সিসিটিভি। এছাড়াও বহু বুধে সিসিটিভি ক্য়ামেরা অকেজ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। তবে পুলিশ ও কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রিসাইডিং অফিসারদের উপযুক্ত ব্য়বস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
অপরদিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিতের পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে থাকলেও অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের। তবে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসের সামনে এবং খান্না হাইস্কুলের সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারদের বিরিয়ানি খাওয়ানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। তৃণমূল সমর্থকরা ওই এলাকা ঘিরে ফেলে। পরে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
আবার মেটিয়াবুরুজে ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়েছিল এলাকা। ভোট শুরুর পরই ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষের নির্বাচনী কার্যালয় বন্ধ করল পুলিশ। অভিযোগ, তাঁর অফিসে অবৈধ জমায়েত হচ্ছিল। এমনকী, নির্বাচনীবিধি ভেঙে দলীয় প্রতীক দেখা যাচ্ছিল বিজেপির কার্যালয়ে। এই কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটামুটি শান্তিপুর্ণভাবেই চলছে ভোটগ্রহন। তবে ভোট চলছে ধীরগতিতে। বেলার দিকে ভোটের লাইনে ভিড় বাড়বে বলেই আশা প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।