নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: বারবার ভোটে দাঁড়িয়েও ব্যাকফুটে হাঁটতে হচ্ছিল বাংলাদেশের বিতর্কিত ইউটিউবার তথা গায়ক হিরো আলম। মনোনয়ন পত্রের জন্যে বারবার দল বদলাতে হচ্ছিল তাঁকে। তবে কিছুদিন আগেই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন মনোনয়ন ফিরে পেলেও তিনি ভোটে লড়বেন না। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, আর পিছু হঠবেন না তিনি। ভোটে লড়ছবেন। আর দিন কয়েক বাদেই বাংলাদেশে সাংসদ নির্বাচন। যাতে ইতিমধ্যেই অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের একাধিক তারকারা। আছেন, মাহিয়া মাহি, ফেরদৌস প্রমুখ। সেই যাত্রায় পিছিয়ে নেই আলোচিত গায়ক-মডেল আশরাফুল আলম সঈদ ওরফে হিরো আলম। আজকাল তিনি ভুলভাল গানে মনোনিবেশ না করে রাজনীতি তেই বেশি নাক গলাচ্ছেন। এক সময়ে তাঁর গান নিয়ে রীতিমতো হুটোপাঠি পড়ে যেত সোশ্যাল মিডিয়ায়। রবীন্দ্রনাথের গান বেসুরো এবং ব্যঙ্গ সুরে গেয়ে থানা পর্যন্ত তাঁকে যেতে হয়েছিল।যাই হোক, বর্তমানে তিনি দেশের জন্যে ভালো কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সেই উদ্যোগ মাটি চাপা দিচ্ছে বিরোধী দলগুলি।
সপ্তাহ কয়েক আগেই বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন তুলেছিলেন হিরো আলম। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দল পাল্টিয়ে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু সেটাও বাতিল হয়ে যায়। কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল হলফনামায় একাধিক ভুল-ত্রুটি। তবে দিন কয়েক আগেই তিনি তাঁর মনোনয়নপত্রের বৈঠতা ফিরে পান। কিন্তু প্রার্থিতা ফিরে পেলেও নির্বাচনে লড়বেন না এটাই জানিয়েছিলেন হিরো।
কিন্তু বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেছেন, “আমি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও এখন নির্বাচনে থাকবো। আমাদের দেশে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। এই যে সুষ্ঠু হয় না সেটা দেখায় একমাত্র আপনাদের হিরো আলম। তাই নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয় সেটা দেখানোর জন্যই আমি প্রত্যাহার করব না। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি হয়, আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করায়, এটা কোনো নির্বাচন না। এটা পাতানো নির্বাচন। আমি নির্বাচনটা করছি প্রতিবাদ হিসেবে। অনেকে বলেছেন আমি টাকার কাছে বিক্রি হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আবার কেউ বলেছেন ভয় পেয়ে সরে দাঁড়িয়েছি। আসলে এসবের কিছুই নয়। নির্বাচনে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সেটা প্রতিবাদ করা যায়। তাই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করব না। দেশজুড়ে সংগঠনের সদস্যদের নির্বাচনের প্রার্থীরা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। তারা আজ দিনের মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।”
প্রসঙ্গত, হিরো আলম গতবছর ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে হেরে গেলে নির্বাচনের দিন তাঁর ওপর হামলা হয়। হিরো আলমের প্রতি এই অবিচারের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস ও হাইকমিশন। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হিরো আলম।