নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সুরালোকে পাড়ি দিয়েছেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ অর্থাৎ কে কে। ইতিমধ্যেই কলকাতা থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে তাঁর মরদেহ নিয়ে তাঁর পরিবার। আর তাঁর পরিবারের কাছে যেন এই শহরের মানুষগুলো একপ্রকার লজ্জা পেয়েছেন। তাঁদের চোখের দিকে চোখ তুলে তাকাতে লজ্জা পেয়েছেন। কারণ একজন শিল্পীকে নিজেদের শহরে ডেকে নিয়ে এসে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া, চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও সঙ্গে বাংলারই শিল্পীর করা কটূ মন্তব্য।
সোমবার ফেসবুক লাইভে এসে শিল্পী রূপঙ্কর বাগচী যেভাবে বারবার বলছিলেন ”কে কে , কে কে , কে কে, হু ইজ কে?’ তাতে চটেছেন তাঁর সহকর্মী থেকে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই। কেউ বলেছেন রূপঙ্করকে ব্যান করা হোক। এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন লোকসঙ্গীত শিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় ও ইমন চক্রবর্তী। কলকাতায় কে কে-এর প্রথম দিনের কনসার্টে লুকিয়ে গিয়েছিলেন পৌষালী। কারণ তিনি বাকি সবার মতই গায়কের একজন বড় ভক্ত। কিন্তু একদিন আগেই যার গান শুনলেন গিয়ে সেই মানুষটাই আজ নেই হয়ে গেল এটা মেনে নিতে পারেননি পৌষালী। একইসঙ্গে তিনি বেজায় চটেছেন রূপঙ্কর বাগচীর উপরেও। তাঁকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পৌষালী লিখেছেন, ”একজন শিল্পী গান গেয়ে চলে গেলেন আর এক জন শিল্পী ভাট বকে শেষ হয়ে গেলেন।”
রূপঙ্করের বেফাঁস মন্তব্যের বিরোধীতা করেছেন বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী। এই মুহূর্তে তিনি কলকাতার বাইরে পরিবারের সঙ্গে জগন্নাথ দর্শনে গিয়েছেন। তাই ফেসবুকে অ্যাক্টিভ নেই বলেই জানান, কিন্তু শেষমেশ আর না পেরে তিনি ফেসবুকে একটি লাইভ ভিডিও করেন। সেই ভিডিওতে এসে বলেন, ”রূপঙ্কর দার এই মন্তব্যকে আমি একেবারেই সমর্থন করি না। রূপঙ্কর দাকে বলব তোমার ভিডিওতে তুমি যাঁদের নাম নিয়েছো তাঁদের থেকে একবার জেনে নিতে পারতে যে তোমার সঙ্গে তাঁরাও একই মত পোষণ করেন কিনা? আমি তোমার এই মন্তব্যকে মেনে নিতে পারছি না। ” ইমন আরও বলেন ”মিউজিক তো ইউনিভার্সাল। মানুষ কী শুধুই নিজের ভাষায় গান শুনবেন? তাহলে কী করে হবে? তাই কোনও কথা বলার আগে অনেক ভেবেচিন্তে মন্তব্য করা উচিত।”
তাঁর আরও সংযোজন, ”একইভাবে বলব রূপঙ্কর দার কথার জন্য কে কে জি মারা যাননি। এটা একটা কাকতলীয় ব্যাপার। রূপঙ্কর দার এই মন্তব্যকে আমি একেবারেই সমীচীন মনে করি না। কিন্তু যারা বলছেন যে রূপঙ্কর দার অভিশাপেই কে কে জি চলে গেলেন তাঁরা এই কথাগুলি প্লিজ বলবেন না। তাতে যে মানুষটা চলে গেলেন তাঁর কাজকে ছোট করা হয়। সবথেকে বড় কথা এত বিতর্কের পর দিনের শেষে মানুষটা নেই। আমি নিজে মুগ্ধ হয়ে কে কে জির গান শুনেছি, তাঁকে এত কাছ থেকে দেখেছি আরও বেশি করে মনে পড়ছে সবটা। বিশ্বাস করুন আমি আজ যে জায়গায় রয়েছি তা শুধু বাঙালি শ্রোতাদের ভালবাসায়। শ্রোতারা কখনও বিভাজন করেন না। আমার স্টেজ পারফর্ম্যান্স আর কে কে জির পারফর্ম্যান্সের মধ্যে তাঁরা কখনও বিভাজন তৈরি করতে আসেননি। আমি বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে গিয়েছি। মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। সব শেষে তিনি বলেন কে কে-এর বাকি ফ্যানেদের মত কাল থেকে আমিও ভালো নেই। এরপর থেকে কোনও শিল্পীকে আমরা যদি ডাকি তাঁদের যেন আমরা একটু যত্ন করতে পারি আগামীতে।