নিজস্ব প্রতিনিধি: সুপারস্টার সলমান খানের বাড়িতে গুলিকাণ্ডের কথা কারোরই অজানা নয়। বহুদিন ধরেই কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নজরে রয়েছেন সুপারস্টার। বহুদিন ধরেই তাঁকে গ্যাংস্টারের দলবল থেকে পাঠানো হচ্ছে মৃত্যু হুমকির চিঠি। যার ফলে অভিনেতার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। কিন্তু তাও দুষ্কৃতী দের কোনও পরোয়া নেই। গত ১৪ এপ্রিল কাকভোরে সলমান খানের মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে চার পাঁচ রাউন্ড গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালায় দুষ্কৃতীরা। এরপর মুম্বই পুলিশের তৎপরতায় গুজরাতের ভূজ মন্দির থেকে গ্রেফতার হন সুপারস্টারের বাড়িতে হামলা চালানোর ২ অপরাধী। তদন্তে উঠে আসে, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোইয়ের সুপারিশে ৪ লাখ টাকার বিনাময়ে অভিযুক্তদের এই কাজ করানো হয়।
তবে তাঁরা সুপারস্টারকে ভয় দেখানোর জন্যেই এই কাণ্ড করেছেন। বুধবার শোনা গেল, সলমান খানের বাড়িতে হামলা চালানোর একজন অভিযুক্ত অনুজ থাপান পুলিশ হেফাজতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। অনুজের বিরুদ্ধে শ্যুটারদের অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা গিয়েছে, থাপনকে কাছের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে, দুই শ্যুটার, ভিকি গুপ্তা এবং সাগর পাল, যারা বান্দ্রায় অভিনেতার বাসভবনের বাইরে গুলি চালিয়েছিল তাদের গুজরাতের ভুজ থেকে আটক করা হয়েছিল। মুম্বই পুলিশ গ্রেফতারকৃত সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মকোকা ধারা প্রয়োগ করেছে। মুম্বাই পুলিশ গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইকে গ্যাং লিডার বলে বর্ণনা করেছে। এফআইআর-এ MCOCA-এর ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।
অনুজ থাপানকে ২৬ এপ্রিল পঞ্জাব থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আজ ১ মে ভোরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন অনুজ থাপান এবং তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, ৩২ বছর বয়সী অনুঝকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন সিনিয়র পুলিশ অফিসার পিকে জৈন একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, কারাগারে যে কোনও মৃত্যুকে হত্যার মামলা হিসাবে রিপোর্ট করা হয়। থানার সমস্ত পুলিশ সদস্যদের সিআইডিকে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রাক্তন শীর্ষ পুলিশ বলেছেন যে, সাধারণত লক-আপগুলি এমন কোনও বস্তুর দ্বারা সমৃদ্ধ, যা কোনও ব্যক্তি আত্মহত্যার জন্য ব্যবহার করতে পারে। এমনও অনেক হয়েছে যে, লক-আপের ভিতরে পায়জামার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছে আসামী। এদিকে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এবং গোল্ডি ব্রারের হুমকির পরে সালমানের নিরাপত্তা স্তর ২০২২ সালে Y-প্লাসে উন্নীত হয়েছিল। অভিনেতাকে একটি ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র বহন করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল এবং অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য একটি নতুন সাঁজোয়া যানও অর্জন করেছেন তিনি।
পরে, মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি চিঠি লিখে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণয়ের ভাই আনমোলের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করার অনুরোধ করেছিল। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে সালমান খানের বাড়িতে গুলি চালানোর দায়িত্ব নেন আনমোল বিষ্ণোই। মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চের মতে, সলমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালানোর অভিযোগকারী শ্যুটারদের কাছে দুটি বন্দুক ছিল এবং তাদের ১০ রাউন্ড গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।