নিজস্ব প্রতিনিধি: রক্তের নয়, আত্মার সম্পর্ক। স্থান-কাল-জাতধর্ম-লিঙ্গ নির্বিশেষে পৃথক করা যায়না যে সম্পর্ক , সেই একাত্মতাই বন্ধুত্ব। শত বিপত্তি অতিক্রম করে দাঁড়ানো যায় বন্ধুর পাশে। বন্ধু হারালে একাকিত্বের গ্লানি ছেয়ে ওঠে হৃদয়জুড়ে। আর তাই বন্ধুর খোঁজে সটান বিজ্ঞাপন দিয়ে বসে আছেন ৮৫ বছরের বৃদ্ধ আবদুল মজিদ। বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন চারমাস আগে। তবে সুফল মেলেনি। আশা ভঙ্গ হয়ে মজিদ ফিরে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া।
নাটক বা সিনেমা নয়। বাস্তবে এমনটা কমই দেখা যায়। আবদুল মজিদ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সুবাদে আশির দশকে লিবিয়ায় ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। লিবিয়াতেই বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। নব্বইয়ের দশকের অবসরের পর আবদুল অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারের কাছে চলে যান। অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেই বন্ধুদের খোঁজ করেন।
৩০ বছর পর আবদুল চেয়েছিলেন বৃদ্ধ বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে কিছু রঙিন মুহূর্ত কাটাবেন।তাই বিজ্ঞাপন দিয়ে লিখেছিলেন, ‘পুরোনো দিনের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাই। আলাউদ্দিন সাহেব (এসপিআইটি পাকিস্তান) লন্ডনের মান্নান সাহেবের পুরোনো বন্ধু, রেহেনা ভাবি টাঙ্গাইল। সূচরিতা দিদি, আব্বাস সাহেব রাজশাহী, হান্নান সাহেব পাবনা (সইছে), মনির সাহেব নোয়াখালী, নুরুল ইসলাম তালপুকুরপাড় কুমিল্লা।’ তাঁর যোগাযোগ নম্বরে অনেকের ফোন এলেও বন্ধুদের ফোন আসেনি। বহু প্রতীক্ষার শেষে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।
আমরা ফেলে আসি আমাদের ছেলেবেলা, কর্মজীবন। সঙ্গে পড়ে থাকে ফেলে আসা মুহূর্ত। সময় এগিয়ে যায় কিন্তু স্মৃতির পাতায় দগদগে থেকে যায় মুহূর্তগুলি। যা কখনই ভোলা যায়না। বৃদ্ধ আবদুল বাবুও ভুলতে পারেননি। বন্ধুর ঠিকানা আদৌ মিলবে কিনা একরাশ আশা নিয়ে আক্ষেপের সঙ্গেই দেশ থেকে বিদায় নিলেন তিনি।