আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বয়স্ক মানুষের সংখ্যা কমাতে পাঁচ বছর আগে দুই সন্তান নীতি নিয়েছিল চিন সরকার। কিন্তু তা সত্বেও বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশটিতে ক্রমশই কমছে জন্মহার। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে শি চিনফিংয়ের দেশে প্রতি এক হাজারে সন্তান জন্মদানের হার ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। সোমবার চিনের ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাস্টিকসের প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে যেখানে জন্মহার ছিল ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ, তা গত বছর কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশে। আর এই রিপোর্টে অশনিসঙ্কেত দেখছেন চিনের প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যায় হ্রাস টানতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতি চালু করেছিল চিন সরকার। যা দেশের অর্থনীতিতে ভাল প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু সমস্যাও দেখা দিয়েছে। দেশে ক্রমশই বেড়েছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা। ফলে যে জনশক্তির জোরে বিশ্ববাজারে দাদাগিরি দেখিয়ে চলেছে এশিয়ার দেশটি, তা কতদিন ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা। ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি বাদ দিয়ে দুই সন্তান নীতি চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্তান জন্মদানের আগ্রহ দেখা যায়নি। শহুরে জীবন ব্যয়বহুল হওয়ার কারণেই এটা ঘটেছে।
চিনের পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৪৯ সালে দেশে জন্মহার ছিল সর্বনিম্ন। ৭২ বছরের সেই রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও জন্মদান কমের হারে দ্বিতীয়স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ২০২১ সাল। ২০২০ সালে যেখানে দেশে এক কোটি ২০ লাখ শিশু জন্ম নিয়েছিল, সেখানে ২০২১ সালে চিনে মোট শিশু জন্ম নিয়েছে এক কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। ২০২১ সালে স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ০.০৩৪ শতাংশ। ১৯৬০ সালের পর এই হার ছিল সর্বনিম্ন। পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাংয়ের কথায়, ‘চিনে প্রত্যাশার চেয়ে যে বয়স্কদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে সে বিষয়টি পরিষ্কার।’