নিজস্ব প্রতিনিধি: থমকে গিয়েছে হাওড়া ব্রিজ(Howrah Bridge) থেকে মধ্য কলকাতার(Central Kolkata) বিস্তৃত এলাকা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ব্রাবোর্ন রোড। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কলকাতায় প্রবেশের অধিকাংশ রাস্তা। না কোনও সিনেমা বা উপন্যাসের চিত্রনাট্য নয়। নয় কোনও ক্লাইমেক্স দৃশ্য। পুজোর মুখে কাজের দিনে মঙ্গলবার সকাল ১১টার কিছু পর থেকেই এই দশা হয়েছে শহর কলকাতার। কেননা হাজার হাজার টোটোচালক এবং মোটর ভ্যান চালকের মিছিল(Toto and Van Drivers’ Procession) শুরু হয়ে গিয়েছে হাওড়া স্টেশন থেকে। হাওড়া ব্রিজ, ব্রাবোর্ন রোড ফ্লাইওভার(Brabourne Road Flyover) ধরে সেই মিছিল এগিয়ে গিয়েছে ধর্মতলার পথে। আর সেই মিছিলকে জায়গা করে দিতে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়া ব্রিজ থেকে মধ্য কলকাতার একটা বড় অংশ। স্ট্রান্ড রোড থেকে ব্রাবোর্ন রোডে মায় হাওড়া ব্রিজেও সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে বাস, ট্যাক্সি, অন্যান্য গাড়ি। তীব্র যানজটে ভোগন্তির মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রী থেকে কলকাতায় পুজোর বাজার করতে আসা আমজনতা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ব্রিজ ধরে চলা ওই টোটোচালকদের মিছিলে রয়েছেন কম করে ১৫-১৬ হাজার মানুষ। প্রত্যেকেই হয় টোটো চালক নয়তো মোটর ভ্যান চালক। সরকারি লাইসেন্স এবং জাতীয় সড়কে গাড়ি চালানোর অনুমতি— মূলত এই দুই দাবি নিয়েই মঙ্গলবার পথে নেমেছেন তাঁরা। গন্তব্য রাজ্যের পরিবহণ ভবন। মিছিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পরিবহণ ভবন চলো’(Paribahan Bhawan Cholo) অভিযান। মিছিলে সামিল টোটো ও ভ্যান চালকদের দাবি, বাংলার ২০ লক্ষ টোটো আছে। মোটর ভ্যানের সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। ওই সব টোটো ও ভ্যান চালকেরা প্রত্যেকেই প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশের কাছে। তাঁদের জুলুমবাজির শিকার হতে হচ্ছে। পুলিশ নিত্যদিন ভুয়ো কেস দিচ্ছে। এক একদিন তাঁরা যা রোজগার করছেন তার থেকে বেশি টাকা পুলিশকে দিতে চলে যাচ্ছে তাঁদের। তার প্রতিবাদেই এদিন তাঁরা নেমেছেন। তাঁরা চাইছেন না পেট চালাতে গিয়ে রোজ রোজ এই হয়রানির মুখে পড়তে। রাজ্য সরকার তাঁদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করে দিলে তাঁরা সেই কাজই করবেন।
সম্প্রতিই রাজ্য পরিবহণ দফতর টোটো চালকদের ওপর একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, টোটোচালকেরা জাতীয় সড়কে বা মূল রাস্তায় টোটো চালাতে পারবে না। মূলত সেই নির্দেশের প্রতিবাদেই পরিবহণ দফতরে যাওয়ার এই অভিযানের ডাক দেন টোটোচালকেরা। তাঁদের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালের ওই মিছিলে যোগ দেন মোটর ভ্যান চালকেরাও। রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতরের কার্যালয় ধর্মতলায়। হাওড়া ব্রিজ থেকে সেই পরিবহণ দফতরের উদ্দেশেই ওই দীর্ঘ মিছিল এগিয়ে চলায় সকাল ১১ টার কিছু পর থেকে থমকে যায় হাওড়া থেকে ধর্মতলাচগামী রাস্তাগুলি। অনেক নিত্যযাত্রীকেই দেখা যায় বাস, ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়ে হাঁটতে শুরু করেছেন হাওড়া ব্রিজ, বড় বাজার বা স্ট্র্যান্ড রোড ধরে। তবে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হাওড়া থেকে ধর্মতলামুখী ব্রাবোর্ন রোডের একটি লেন খুলে দেওয়া হয়। তার পরে খুব ধীরে হলেও যান চলাচল শুরু হয়েছে।