নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপিতে(BJP) বেসুরোদের তালিকা ক্রমশই বড় হয়ে চলেছে। শুধু তাই নয়, একদিন আগেই বিজেপির নেতারা সে সব দাবি করছেন, দেখা যাচ্ছে তারপরের দিনই পুরো উল্টো কথা বলছেন তাঁরা। কখন কখনও তো পুরো একদিন সময়ও নিচ্ছেন না, ১২ ঘন্টার মধ্যেই আগের ঘোষিত অবস্থান ছেড়ে পুরো পাল্টি খেয়ে যাচ্ছেন। এই যেমন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা(Anupam Hazra)। রবি বিকালে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং(Arjun Singh) ফের তৃণমূলে(TMC) ফিরে আসায় অনুপম যে পোস্ট করেছিলেন তার চূড়ান্ত বিপরীত অবস্থান তিনি দেখিয়ে দিলেন এদিনের পোস্টে। আর তার জেরেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, এবার কী তাহলে অনুপমও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন, অর্জুনের মতো।
অর্জুনের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘিরে রবি বিকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়াতে(Social Media) ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের নাম না করেই দাবি করেছিলেন, ‘আগে পাণ্ডবদের মধ্যে এক জন গণ্য করা হত। কিন্তু কৌরবদের মধ্যেও তাঁকে পাওয়া গেলে কতটা অবাক হব ঠিক বুঝতে পারছি না।’ কিন্তু সেই অবস্থান রাতারাতি বদলে গেল সোমবার সকালে। এদিন অনুপম লিখেছেন, ‘কেউ দল ছাড়লেই “এতে কোনও ক্ষতি হবে না” বা “গুরুত্ব দিতে নারাজ” বলে নিজেদের সান্ত্বনা না দিয়ে “ক্ষতি যে কিছুটা হয়ে গেল” সেটা মানতে শেখা দরকার বা কেন বারবার ছেড়ে যাচ্ছে সেটা বিশ্লেষণ করা দরকার!!! কিন্তু কেউ নিতান্তই নিজের ব্যক্তি-স্বার্থ-চরিতার্থ করার বা নিতান্তই ধান্দাবাজির জন্য অন্য দলে গেলে, সেটাকে গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল!!! বাস্তবটাকে অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে একটা কাউন্সিলর সিট জিততে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে, সেখানে কাউন্সিলরের যথেষ্ট উপরের পদমর্যাদাসম্পন্ন কেউ ছেড়ে গেলে নিঃসন্দেহে তা দলের ক্ষতি!!! অল ইজ ওয়েল বলে নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়াটা সিনেমাতে দেখতে ভাল লাগলেও, বাস্তবে সেটা সবসময় নাও খাটতে পারে!!’ পরিশেষে অনুপম এটাও লিখেছেন যে, ‘মতামত ব্যক্তিগত, কিছু মানুষের পছন্দ নাও হতে পারে!!!’
রবিবার অর্জুনের দলবদলের সম্ভাবনা জোরালো হতেই ফেসবুক পোস্টে কটাক্ষ করেছিলেন অনুপম। কিন্তু সোমবার সেই অনুপম বুঝিয়ে দিলেন অর্জুনের দলবদলে আখেরে ক্ষতিই হল বিজেপির। অর্জুন সিংয়ের দলবদল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি। দলের অন্দরে চলছে জোর চর্চা। তবে তা সত্ত্বেও অনেকেই দাবি করছেন, অর্জুনের দলবদল গেরুয়া শিবিরে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। বাবুল সুপ্রিয়ের দলবদলের পরেও এই তত্ত্বকেই সিলমোহর দিয়েছিলেন শীর্ষনেতারা। তবে অনুপমের এদিনের বক্তব্য একেবারেই অন্যরকম। দলের আত্মবিশ্লেষণের দাবিতে সরব তিনি। অর্জুনের মতো একজন দক্ষ সংগঠক দল ছাড়ায় যে গেরুয়া শিবিরের যথেষ্ট ক্ষতি হবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই বলেই মত তাঁর। আর এসবের মাঝে অনুপম হাজরার এদিনের পোস্ট যে বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেবে সেটা আর আলাদা করে বলার প্রয়জন নেই। বরঞ্চ চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে, অনুপম কবে তৃণমূলে ফিরবেন তা নিয়ে।