নিজস্ব প্রতিনিধি: এর আগে বলেছিলেন চুপ করে থাকতে। আর এবার বুঝিয়ে দিলেন, জোট হচ্ছেই। তাঁর এই দুই পদক্ষেপে এখন মুখ পুড়ছে তাঁরই দলের প্রদেশ নেতৃত্বের। কেননা তাঁর অবস্থান প্রদেশ নেতৃত্বের একদম বিপরীত মেরুতে। ঠিক যেমনটি বলে দিয়েছেন দলের জাতীয় সভাপতি, ‘জোটে মমতাকে(Mamata Banerjee) চাই-ই-চাই।’ অগ্যতা তীব্র অস্বস্তিতে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। আরও বলা ভাল অধীর রঞ্জন চৌধুরীর(Adhir Ranjan Chowdhury) শিবির। কেননা তাঁদের অবস্থান বাংলার মাটিতে ২৪’র যুদ্ধে(General Election 2024) তৃণমূলের(TMC) সঙ্গে আসন সমঝোতা না করা। কিন্তু এদিন দলের বড় মাথা যে বার্তা দিলেন তাতে স্পষ্ট, জোট হচ্ছেই। স্বাভাবিক ভাবে এটাও এখন পরিষ্কার যে অধীর শিবির কী ভাবল বা করল কিংবা কি বলল তা আর গুরুত্ব নেই কংগ্রেস(INC) হাইকম্যান্ডের কাছে। তাঁরা অধীর অপেক্ষা মমতাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। নজরে রাহুল গান্ধি(Rahul Gandhi)।
এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার অসমে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় রাহুল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘বাংলায় আমাদের আসন ভাগাভাগির আলোচনা চলছে। খুব শীঘ্রই তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসবে। মমতাজির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ভাবে এবং দলেরও খুব ভালো সম্পর্ক। কখনও কখনও এমন হয়, ওদের দলের কেউ আমাদের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন আবার আমাদেরও কেউ কেউ কিছু তীর্যক বলে ফেলেন। এগুলো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এর জন্য ইন্ডিয়া জোটের কোনও সমস্যা হবে না।’ কার্যত রাহুল বুঝিয়ে দিয়েছেন, মমতার হাত তাঁরা ছাড়ছেন না। এমনকি একদম শেষ মুহুর্তে মমতা যদি কংগ্রেসকে একটিও আসন না ছাড়েন তাহলেও রাহুলের কংগ্রেস মমতা বিরোধিতার পথে হাঁটবে না। তা সে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা যতই লম্ফঝম্ফ করুক না কেন মমতার বিরুদ্ধে। এমনকি কংগ্রেস সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে যে, তৃণমূলের সঙ্গে বাংলায় জোট নিয়ে যদি প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের আপত্তি তীব্র হয় তাহলে তাঁদের বাইপাস করেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সেক্ষেত্রে যদি অধীর বা আবু হাসেম খান চৌধুরী যথাক্রমে বহরমপুর বা দক্ষিণ মালদা থেকে প্রার্থী হতে না চান, তাহলে জাতীয় স্তরের কোন কংগ্রেস নেতাকে সেখানে প্রার্থী করা হবে।
রাহুলের বার্তার পরে এদিন অধীরকে নিশানা বানিয়েছে তৃণমূলও। দলের সাংসদ শান্তনু সেন এদিন জানিয়েছেন, ‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সমস্যা তো রাহুল গান্ধি নয়। সমস্যা তো ওনারা এখানে যাকে বসিয়ে রেখেছেন তিনি। অধীরবাবু এখানে নিরন্তর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সম্পর্কে কুৎসা করে বেড়াচ্ছেন। বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন। তৃণমূলকে হারাতে আইএসএফ, সিপিএমের হাত ধরছেন। অথচ তিনি তাঁর দলকে বিধানসভার ভোটে জেতাতে পারছেন না। তিনি তাঁর নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১টিও তাঁর দলের প্রার্থীদের জেতাতে পারেননি। অথচ ওনার বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি জিতেছে। এদের সঙ্গে জোটে কে যাবে সেটাই প্রশ্ন। রাহুল গান্ধিকে বলবো এটা দেখতে। এরা কেউ কংগ্রেসি নয়, এরা বিজেপির দালাল। বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া আর তাদের হাতে আসন তুলে দেওয়াই এদের কাজ। আর তৃণমূল প্রয়োজনে বিজেপির বিরুদ্ধে একা লড়তে প্রস্তুত সেটা আমাদের দলনেত্রীই পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন।’