নিজস্ব প্রতিনিধি: রসে বশে থাকা বাঙালি এবার বেশ চুটিয়ে উপভোগ করেছে মধ্য প্রাচ্যের দেশ কাতারে আয়োজিত বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা। রাত জেগে, অফিস কামাই করে বাঙালি চোখে রেখেছে টিভি কিংবা মোবাইলের স্ক্রিনে। একই সঙ্গে দূরত্ব ও খরচ কম হওয়ায় এবার প্রচুর বাঙালি কাতারের বুকে চলে গিয়েছিলেন ফুটবলের এই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতা চাক্ষুষ করতে। কিন্তু এই তথ্য দিতে এই লেকার অবতারণা নয়। এই লেখার অবতারণা বাঙালির ফুটবল আর সুরার নেশা মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরতে। পরিসংখ্যান বলছে গত রবিবার(Sunday) হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপ ফাইনেলের(Fifa World Cup Final) দিনে বাংলাজুড়ে ৭০ কোটি টাকার মদ(Wine) বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি জেলায় কম বেশি ১ কোটি টাকার মতো মদ বিক্রি হয়েছে সেদিন।
আরও পড়ুন লক্ষ্যই ‘অর্ধেক’, অধিকারীদের জেলায় রাশ আলগা গেরুয়ার
এবারের বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে কার্যত গোটা বিশ্বের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হয়েছে। কেননা বিশ্বের সিংহভাগ মানুষ তথা ফুটবল প্রেমীরা চেয়েছিলেন মেসির হাতেই উঠুক বিশ্বকাপ। বাংলার(Bengal) বেশির ভাগ মানুষও সেটাই চেয়েছিলেন। তাঁরা রবিবার রাতে মেসির(Messi) জন্য রাত জেগেছেন, পিকনিক করেছেন, গলা ফাটিয়েছেন, বোম ফাটিয়েছেন, কেঁদেছেনও। আর সেই সঙ্গে ডুব দিয়েছেন মদের গেলাসেও। রাজ্যের আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, মেসিজ্বরে আক্রান্ত বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা বিশ্বকাপ ফাইনালের রাতে হয়ে উঠেছিলেন সুরাপ্রেমী। কার্যত তাঁদের এই ভোলবদলের জন্যই সেইদিন ৭০ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল বাংলায়। অনান্য রবিবার বা ছুটির দিন কমবেশি ৫০ কোটি তাকার মদ বিক্রি হয় বাংলার বুকে। কিন্তু রবিবার সেটাই ৭০ কোটি টাকার অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে। মানে ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত মদ বিক্রিই হয়েছে এই মেসি আর এমবাপের(Embape) লড়াইয়ের দৌলতে।
আরও পড়ুন এমন লোকও আছে তৃণমূলে, তাজ্জব বিজেপি
একদিনের এই অতিরিক্ত মদ বিক্রির ঘটনা সামগ্রিকভাবে আবগারি শুল্কে তেমন প্রভাব না ফেললেও, এই বিষয়টি উল্লেখযোগ্য বলেই মত দফতরের কর্তাদের। তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, রবিবার রাজ্যে মদের পাশাপাশি বিয়ারও অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি বিক্রি হয়েছে। সাধারণত উৎসবের মরশুমে বাংলায় এক একদিনের মদের বিক্রি পৌঁছয় ১০০ কোটির কাছাকাছি। গত অর্থবর্ষে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা আবগারি শুল্ক আদায় হয়েছিল রাজ্যে। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার আবগারি শুল্ক আদায় হয়েছে। মার্চ মাসের শেষে যা সাড়ে ১৬ হাজার কোটিতে পৌঁছতে পারে বলে মনে করছেন রাজ্যের আধিকারিকরা। যেহেতু গত রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালের দিনের মদ বিক্রি অন্যান্য দিনের থেকে যথেষ্ট বেশি তাই সেই সূত্রে রাজ্য সরকারের কোষাগারেও অতিরিক্ত রাজস্ব ঢুকবে এটাও নিশ্চিত।