নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধীদের অভিযোগ দানছত্রের সরকার চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। দানছত্র খুলে তিনি নাকি আদতে ভোট কেনার রাজনীতি করছেন। আবার রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকার নাকি তাঁদের মহার্ঘ্য ভাতার টাকা চুরি করে অযোগ্যদের দান করে চলেছে। কখনও কখনও এমনও শোনা যায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দিয়েও নাকি এই সব দানছত্র চলছে। যদিও এই সব অভিযোগের একটিও আজ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। সবটাই অভিযোগ হিসাবেই থেকে গিয়েছে। কিন্তু যেটা প্রমাণিত হয়েছে সেটা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) চালু করা আর্থসামাজিক প্রকল্প গ্রাম বাংলা থেকে শহরের বসবাসকারী নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জীবনে শুধু যে উন্নয়নের ছোঁয়া নিয়ে এসেছে তাই নয়, রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়কও হয়েছে। এবার সামনে এল নতুন আরও একটি বিষয়। আর তা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থসামাজিক প্রকল্প বাংলার(Bengal) মহিলাদের আত্মনির্ভরতা(Self Confident) বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন Road Side কেনাকাটায় দেশের সেরা পাঁচে Park Street – Camac Street
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে বাংলার প্রায় ২ কোটি মহিলা পাচ্ছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা। কন্যাশ্রীর টাকা পাচ্ছে ৬ লক্ষ ছাত্রী। লক্ষের বেশি মহিলা পাচ্ছেন জয় জোহর বা জয় বাংলার পেনশন। প্রতি মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে টাকা। কেউ পাচ্ছেন ৫০০ করে কেউ বা ১০০০। এই টাকাই মহিলাদের আত্মনির্ভরতা বড়িয়ে দিচ্ছে। এই টাকা জমিয়ে কেউ বাড়ির আসবাব কিনছেন, কেউ বাড়িতে পুজোর আয়োজন করছেন, কেউ মুদিখানা দোকানের জিনিস কিনছেন, কেউ বা তা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য খরচ করছেন। কারও তা খরচ হচ্ছে চিকিৎসার জন্য বা ওষুধ কেনার জন্য। কেউ কেউ তো আবার টাকা জমাচ্ছেন বাড়ি করার জন্য, কেউ ছেলেমেয়ের বিয়ে বা উচ্চশিক্ষার জন্য। মাথাপিছু টাকার অঙ্ক হয়তো খুব বেশি নয়। কিন্তু এই অর্থটুকুই বাংলার মহিলাদের ক্ষমতায়নের(Women Empowerment) সুযোগ করে দিচ্ছে। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হচ্ছে। প্রতিমাসে তাঁরা ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন এবং নানা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। এগুলিই তাঁদের আত্মনির্ভরতার সুযোগ করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন ৫ কোটি, তাতেই সাজছে জল্পেশ মন্দির
মমতার আমলে যে বাংলার মহিলাদের দিনযাপনের ছবিটা অনেকটাই বদলে গিয়েছে সেটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। শুধু যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, জয় জোহর, জয় বাংলা এই ছবি বদলে দিয়েছে তা নয়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ইস্যু হচ্ছে বাড়ির বয়স্ক মহিলার নামে যা তাঁকেও বাড়তি মর্যাদা দিয়েছে। পুরুষকে ডিঙিয়ে যে তিনিও পরিবারের প্রধান হতে পারেন সেই অনুভব তিনি পেয়েছেন। পাশাপাশি মমতার আমলেই বাংলার বুকে মহিলাদের কর্মসংস্থানের হার সব থেকে বেশি। কেননা আগে সরকারি ক্ষেত্রে মহিলাদের কাজের সীমাবদ্ধ ছিল নার্স, শিক্ষিকা ও আশাকর্মীদের মধ্যেই। আর কিছু ছিল মহিলা সরকারি কর্মচারী। কিন্তু মমতার আমলে সেই ছবিতেও বদল এসেছে। ভীষণ রকম ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে গ্রাম বাংলার মহিলাদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ার ক্ষেত্রে। শহরে মেয়েদেরও এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে অপ্রচলিত কাজের ক্ষেত্রে। তা সে মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার হোক কী পিঙ্ক ট্যাক্সির চালকের কাজ হোক। বিরোধীরা যতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিন্দামন্দ করুক না কেন বাস্তব ছবি কিন্তু বলছে মমতার হাত ধরেই বাংলার মহিলাদের ক্ষমতায়ণ ঘটেছে অতিদ্রুত হারে।