নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের(General Election 2024) খুব বেশি দেরি নেই। বছর পেরলেই ভোটের দামামা বেজে যাবে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন, ২০২৪ সালের গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা ভোটের আগে বেঁফাস মন্তব্যে দলের অস্বস্তি বৃদ্ধি পাবে। ফের তা সামাল দেওয়ার পন্থা খুঁজতে হবে গেরুয়া শিবিরের ম্যানেজারদের। তাই সার্বিকভাবে এহেন পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টিই না হয়, সেই লক্ষ্যে আগাম ব্যবস্থা নিতে চাইছে দলের কেন্দ্রীয় পার্টি। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) ক্ষেত্রে। তাঁদের মুখে লাগাম পরাতে, অযথা ‘বয়ান-বাজি’তে রাশ টানতে এবার উদ্যোগী হচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির শীর্ষ সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। কার্যত দলের বঙ্গ নেতৃত্বকে কড়া নজরে রাখতে চাইছেন দলেরই কেন্দ্রীয় নেতারা। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন দলীয় সভা-সমাবেশের মঞ্চে তো বটেই, এমনকী সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা নিয়ে শীঘ্রই দলীয় নেতৃত্বের জন্য নির্দেশিকা জারি করতে পারে বিজেপি।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গ ব্রিগেডের কতিপয় নেতার জন্য রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। বিজেপির একটি অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নও বলছে যে, দেশজুড়ে বিজেপি নেতাদের মধ্যে আলটপকা কিংবা চিন্তাভাবনা না করে মন্তব্য করার প্রবণতা বঙ্গ ব্রিগেডের মধ্যেই বেশি। এই ইস্যুতে তাই বঙ্গ বিজেপির মনের ভাব প্রকাশের রাশ শক্ত হাতে ধরতে চাইছেন দিল্লির নেতারা। এমনই জানাচ্ছে দলীয় সূত্র। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিজেপির নেতারা। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, মিডিয়ার সামনে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ছাড়া অন্য কেউ যেন আর মুখ না খোলেন অথবা বিবৃতি না দেন। এমনকি মিডিয়া-সপ্রতিভ হিসেবে পরিচিত বঙ্গ বিজেপির দু’য়েকজন নেতাকে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও পরিস্থিতিতেই মুখ না খোলার জন্য কার্যত ‘সতর্ক’ করা হয়েছে।
তবে এই অবস্থায় বঙ্গ বিজেপির নেতারাই পাল্টা দাবি তুলেছেন, যদি এই লাগাম তাঁদের মুখে টানা হয় তাহলে রাজ্যকেও নানা পুরস্কারে পুরস্কৃত করার রাস্তা থেকে সরতে হবে কেন্দ্র সরকারকে(Modi Government)। এই যেমন একদিকে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা বলছেন, বাংলার সংখ্যালঘু সমাজকে কাছে টানতে হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারই জানিয়ে দিচ্ছে, National Minorities Development and Finance Corporation’র বিভিন্ন প্রকল্প বাংলায় সবচেয়ে সার্থকভাবে রূপায়ণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সংখ্যালঘু উন্নয়ন তহবিল ব্যবহারের শীর্ষে নাকি বাংলা। তার জেরেই কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রক পুরস্কৃত করেছে West Bengal Minorities Development and Finance Corporation-কে। কেননা কেন্দ্রের বিচারে Rank 1 হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বাংলা। এটা তো পুরো দ্বিচারিতা। একদিকে বাংলায় দলের নেতাদের বলা হচ্ছে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের কাছে গিয়ে বলতে হবে মমতার জমানায় সংখ্যালঘুরা বঞ্চিত হচ্ছে, শোষিত হচ্ছে, অত্যাচারিত হচ্ছে। আবার দলেরই পরিচালিত কেন্দ্র সরকার মমতার সরকারের ঢালাও প্রশংসা করছে। এই অবস্থায় সংখ্যালঘুরা কেন বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কথা বিশ্বাস করবেন? তাঁরা তো মমতা তথা তৃণমূলকেই ভোট দেবেন। কার্যত দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁদের গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নিচ্ছেন।