নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে দুই অপহৃত ছাত্রদের দেহ উদ্ধার হল। বাগুইআটির ওই দুই ছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজ করা হয়েছিল। নিখোঁজ হওয়ার ১৪ দিনের মাথায় উদ্ধার হল তাদের মৃতদেহ। দুই কিশোর ছাত্রের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। মূল অভিযুক্ত সত্যেন চৌধুরী পলাতক। তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগুইআটির দুই ছাত্র অভিষেক নস্কর (১৬) ও অতনু দে-কে (১৫)অপহরণ করা হয়। গত ২২ অগস্ট থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। দু’জনেই হিন্দু মহাবিদ্যাপীঠে দশম শ্রেণীর পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। বাগুইআটির আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুই কিশোর। দুইজনকে অপহরণ করার পর চলন্ত গাড়ির মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাসন্তীতে ফেলে দেয় অপহরণকারীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে বিধাননগর পুলিশের ডিসি ডিডি বিশ্বজিৎ ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ‘অতনু সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দেয় এক বিশেষ ব্র্যান্ডের মোটর সাইকেল কেনার জন্য। তারপর সত্যেন্দ্র সেই মোটর সাইকেল কেনেনি। বরং অতনুর কাছ থেকে আরও টাকা দাবি করে সত্যেন্দ্র। যেটা অতনু দিতে রাজি হয়নি। সেখান থেকে গন্ডগোলের সূত্রপাত।’
পুলিশ সূত্রে খবর, দুই কিশোরকে ২২ অগস্ট মোটরবাইক কেনার নাম করে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যান অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র। এর পর রাজারহাটে একটি বাইকের দোকানে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়েতে যান অভিযুক্ত। সেই পথে যাওয়ার সময় দুই কিশোরকে খুন করা হয়। ২২ অগস্ট সন্ধ্যায় ন্যাজাট থানা এলাকায় এক জনের দেহ উদ্ধার হয়। অন্য আরেক কিশোরের দেহ উদ্ধার হয় ২৩ অগস্ট মিনাখাঁ এলাকায়।
অন্যদিকে মৃত কিশোর অতনুর পরিবারের দাবি, নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর ২৪ অগস্ট অতনুর বাবার কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে এসএমএস আসে। যেখানে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এরপর অতনুর বাবা গোটা বিষয়টি নিয়ে বাগুইআটি থানার পুলিশকে জানান। তাঁদের অভিযোগ, তারপরেও পুলিশ কোনও সদর্থক ভূমিকা পালন করেনি। পুলিশ তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে বর্ধমান থেকে অতনুর ফোন উদ্ধার করে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম যথাক্রমে দিব্যেন্দু দাস, শামিম আলি, শাহিন আলি। যদিও মূল অভিযুক্ত সত্যেন এবং আর এক জন এখনও পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে তদন্তকারীরা।