নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সুশাসনের কৃতিত্ব আরও একবার তুলে ধরল কেন্দ্র সরকারের নীতি আয়োগ(NITI Aayog)। একই সঙ্গে সেই তথ্যের স্বীকৃতি দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও(RBI)। নীতি আয়োগ এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, বাংলায় BPL তালিকাভুক্ত মানুষের(BPL Listed People) সংখ্যা ক্রমশই কমছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই সংখ্যা মাত্র ৮.৬ শতাংশ যা দেশের জাতীয় গড়ের(National Average) থেকেও কম। শুধু তাই নয়, নীতি আয়োগের তথ্য বলছে বাংলার থেকে বেশি সংখ্যক BPL তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা রয়েছে দেশের একের পর এক বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যে। সেই সব রাজ্যের মধ্যে যেমন আছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গুজরাত, তেমনি আছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশও। আছে বিজেপি শাসিত রাজস্থান, ত্রিপুরা, ছত্তিশগড়, অসম, মধ্যপ্রদেশ এবং পাল্টিবাজ নীতীশ কুমারের বিহারও। এই সব রাজ্যে BPL তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাংলার থেকে ঢের বেশি। দেশে এখন PL তালিকাভুক্ত মানুষের সংখ্যা ১১.২৮ শতাংশ। বাংলায় কিন্তু তার থেকেও কম মানুষ BPL তালিকাভুক্ত।
২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার মানুষের সামাজিক সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই সূত্রেই রাজ্যে চালু হয়েছে অজস্র আর্থসামাজিক প্রকল্প যেখানে মানুষের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে যেমন আছে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, মেধাশ্রী, রূপশ্রী, জয় বাংলা, জয় জোহর, তেমনি আছে কৃষকবন্ধু, মৎস্যবন্ধু, তপশিলী বন্ধুর মতো প্রকল্পও। আছে বাংলা শস্য বিমা যোজনাও। আর এই সব প্রকল্পের জন্যই আজ বাংলার বুকে নিশ্চিত হয়েছে প্রান্তিক মানুষের হাতে পর্যাপ্ত নগদের জোগান পৌঁছে দেওয়া। তার জেরে সব থেকে বড় লাভ হিসাবে যা উঠে আসছে তা হল বাংলার বুকে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী বা BPL মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। বাংলায় বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকা মানুষের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৬০ শতাংশ। এর নেপথ্যে যে মমতার মস্তিষ্প্রসূত আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলির উপকারিতাই কাজ করছে সেটা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের পাশপাশি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং দেশের অর্থনীতিবিদদের একাংশও।
শনিবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট বিতর্কের শেষে জবাবী ভাষণে রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ‘আমরা সরকারে আসার কয়েক বছর আগেও ৫৭.৬০ শতাংশ রাজ্যবাসী দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থান করতেন। আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকার দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকা ২ কোটিরও বেশি মানুষের জীবিকার সংস্থান করেছে। ফলে দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থান করছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৪৯ শতাংশ কমে বর্তমানে ৮.৬০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।’ রাজ্যের পরিসংখ্যান নিয়ে অতীতে একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। তবে এই তথ্য দিয়েছে খোদ কেন্দ্রেরই নীতি আয়োগ। ফলে এক্ষেত্রে বিরোধীদের তথ্যকে অস্বীকার করার ক্ষমতা নেই বলে মনে করছেন চন্দ্রিমা। তাঁর মতে, পৃথিবীর তাবড় অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়ানোর কথা বলছেন। কেন্দ্র সেই পথ না মাড়ালেও বাংলার সরকার তা করে দেখিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ নারী ক্ষমতায়নের অন্যান্য প্রকল্প চালু হওয়ায় ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের মহিলারা। এবার আরও বেশি সুবিধা তাঁরা পাবেন।’