এই মুহূর্তে




Buddhadeb Bhattacharjee : সাহিত্যানুরাগী বুদ্ধের কিছু জানা-অজানা কথা




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায় : পুড়ে যায় জীবন নশ্বর…!  রক্তে সাহিত্যের ছোঁয়া। কাকা স্বয়ং সুকান্ত ভট্টাচার্য। তার পাশাপাশি অনবদ্য বাগ্মিতা – এককথায় তিনি ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী ও সংস্কৃতিবান আর বাকি পাঁচজন রাজনীতিকের থেকে আলাদা এক ব্যক্তিত্ব। ছাত্রজীবন থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর সংস্কৃতি চর্চা। বই পড়ার পাশাপাশি নিজেও হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলম। পড়ার টেবিলে মায়াকভস্কি থেকে রবীন্দ্রনাথ, কামু থেকে কাফকা, মার্কস থেকে লেনিন হয়ে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলি সর্বদাই ছিল তাঁর অমর সঙ্গী। বইয়ের পাশাপাশি সিনেমা-নাটকেরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তিনি। বহু বিদেশি লেখকের বই বাংলায় অনুবাদ করেছেন ৷ আবার বামপন্থা নিয়েও বেশকিছু বই লিখেছেন ৷ লিখেছেন বেশ কিছু নাটকও ৷  রাজনীতি এমন এক কেরিয়ার, যেখানে ব্যস্ততা এক অবশ্যম্ভাবী অঙ্গ। তবুও মাঠে ময়দানে সভা-সমিতির ভিড়ে আটকে থাকেননি তিনি। তাঁর জীবন রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে ছিল এক বিস্তৃত পরিসরে ৷ তিনি আজীবন নিভৃতে মগ্ন থেকেছেন জীবনকে চেনার অন্য পাঠশালার ভিন্ন ‘সিলেবাস  নিয়েও।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পড়তেন উত্তর কলকাতার শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ে ৷ এরপর বাংলা সাহিত্য নিয়ে তাঁর পড়াশোনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ জানা যায়, কলেজ জীবনে রাজনীতিতে মন ছিল না তাঁর, বরং কাকার মতোই সাহিত্যচর্চা নিয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করতেন ৷ ভালোবাসতেন নাটক ৷ কফি হাউসে বসে সময় অতিবাহিত করতেন এ সব নিয়েই। কলম্বিয়ান লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কুইজ বুদ্ধদেবের জীবনে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল। মার্কুইজের উপন্যাস অনুবাদ করে তিনি নাম দেন ‘বিপন্ন জাহাজের নাবিক’ ৷ এই অনুবাদ সেই সময় যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৯৩ সালে ‘দুঃসময়’ নামে বুদ্ধদেবের একটি নাটক প্রকাশিত হয়েছিল। সেই প্রথম লেখালেখির জগতে সাড়া ফেলেন তিনি। পাশাপাশি কাফকার বিখ্যাত কাহিনি ‘মেটামরফোসিস’ অবলম্বনেও ‘পোকা’র মতো নাটক লিখেছিলেন তিনি। নাটক-উপন্যাসের পাশাপাশি মানিক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিয়ে ‘পুড়ে যায় জীবন নশ্বর’-এর মতো নন ফিকশনও লিখেছেন তিনি। তবে চীন নিয়ে সমালোচিত ‘স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা’ বইটি বোধহয় তাঁর সবচেয়ে আলোড়ন ফেলা বই। জানা যায়, আটের দশকের শুরুতে প্রমোদ দাশগুপ্তর সঙ্গে চিনে গিয়েছিলেন বুদ্ধ বাবু। এই বইটির মধ্য দিয়ে তিন চিনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছিলেন। এছাড়াও চীনের মত কমিউনিস্ট দেশে বাজার অর্থনীতির হাত ধরে অনেক কোটিপতির আবির্ভাব হওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এই বইটি বাদে ‘নাৎসি উত্থান ও পতন’ নামে তাঁর আরেকটি বইও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

একবার আটের দশকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর কাছে সমরেশ বসুর একটি উপন্যাস নিষিদ্ধ করার সুপারিশ এসেছিল ৷ কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। এছাড়া ১৯৯৮ সালে কলকাতা পুস্তক মেলায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় বহু মানুষ তাঁর সাহিত্যানুরাগের সাক্ষী হয়ে ছিল। সেবার বইমেলার বহু স্টল পুড়ে ছাড়খার হয়ে গেছিল। তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বুদ্ধদেবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতে মাত্র তিন দিনের মধ্যেই পুনর্জন্ম লাভ করেছিল কলকাতা বইমেলা ৷ ইতিমধ্যে অনেক সময় পেড়িয়ে গেছে। কালের প্রভাবে তাঁর শরীরও অসুস্থ হয়ে গেছিল। বলতে গেলে আজ তাঁর প্রয়াণের সাথে সাথেই সেই সমস্ত স্মৃতি মানুষের চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। যেগুলিকে বাদ দিয়ে বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাহিত্যানুরাগী বুদ্ধদেবের মূল্যায়ন অসম্পূর্ন থেকে যাবে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নিল রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল

বুধবার সন্ধ্যায় নবান্ন’র সভাঘরে মুখ্য সচিবের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক

১০ বছরে সিবিআই ব্যর্থতা নিয়ে সরব অভিষেক, দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার পরামর্শ

বৈঠকে বসতে ফের মুখ্যসচিবকে ইমেল পাঠাল জুনিয়র চিকিৎসকেরা

ফের আক্রান্ত পুলিশ, বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধর

মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের নাম সুপারিশ

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর