নিজস্ব প্রতিনিধি: মার্বেল এবং লোহার ব্যবসা দেখিয়ে খোলা হয়েছিল ৩০টি কাগুজে কোম্পানি(Fake Company)। অধিকাংশের ঠিকানা ছিল একই। সেখানে Director হিসেবে বসানো হয় কোম্পানিরই কর্মীদের। তারপর বিপুল পরিমাণ Turnover দেখিয়ে GST দফতরের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হয় ১৩৮ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত কাগুজে কোম্পানিগুলির সেই কিংপিন রাজেশ শাকে গ্রেফতার(Arrested) করল রাজ্যের GST দফতর। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকাও। রাজেশের বরানগরের বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে শিয়ালদা আদালতে এসিজেএম শুভজিৎ রক্ষিতের এজলাসে তোলা হলে রাজেশকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজেশের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়েছে। কেননা ওই ভুয়ো কাগুজে কোম্পানিগুলির টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই ঢুকেছে।
জানা গিয়েছে, আরওসির তরফে বেশ কিছু কোম্পানিকে কিছুদিন আগে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলির লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকা কেন্দ্র ও রাজ্যের জিএসটি দফতরকে পাঠানো হয়। তার ভিত্তিতে বেশকিছু কোম্পানির Yearly Turnover নিয়ে সংশয় জাগে রাজ্য GST’র তদন্তকারী অফিসারদের। এর মধ্যে ৩০টি কোম্পানির মাত্রাতিরিক্ত Turnover তাঁদের নজর এড়ায়নি। ২০১৭-২২’র মধ্যে এই ৩০টি কোম্পানির Turnover’র পরিমাণ ১৩০৬.০৮ কোটি টাকা। তারা লোহা ও মার্বেলের ব্যবসা করে বলে জানিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামাল কেনার কথা উল্লেখ রয়েছে তাদের জমা দেওয়া Invoice-এ। GST’র অফিসাররা তদন্তে দেখেন, যে সমস্ত কোম্পানির নামে Invoice রয়েছে, সেগুলির কোনও অস্তিত্বই নেই। অথচ তাদের নামে মাল কেনা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। এগুলি জমা করে GST’র কাছ থেকে ১৩৮.৯৬ কোটি টাকা ITC হিসেবে আদায় করা হয়েছে।
একই সঙ্গে দেখা যায়, এই কাগুজে কোম্পানিগুলির আসল মালিক বরানগরের বাসিন্দা রাজেশ শা। তিনি ডালহৌসি এলাকায় ২৪টি কোম্পানি খুলেছেন। এরপরই রাজেশকে ডেকে নোটিস পাঠানো হয়। যদিও তিনি হাজিরা দেননি। তারপরই রাজেশকে তার বরানগরের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে GST থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই সব ভুয়ো কোম্পানি খুলতে রাজেশের কোম্পানিতে যারা কাজ করছেন, তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত নথি নেওয়া হয়। এরপর সেগুলি দিয়ে তাঁদের Director দেখিয়ে খোলা হয় কাগুজে কোম্পানি। ITC’র হিসেবে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে আসা টাকা ট্রান্সফার করা হয় রাজেশের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে। সেখান থেকে ৪৫.৮৫ লক্ষ ও ৬৯ লক্ষ জমা পড়ার নথি পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাই ওই অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। অন্য কোথাও টাকা সরানো হয়েছে কি না, তার খোঁজ চলছে।