নিজস্ব প্রতিনিধি: জি ডি বিড়লা(G D Birla Group) কাণ্ডে এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। মঙ্গলবার জি ডি বিড়লা স্কুল কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিকতম সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই শুনানি শেষে তাঁরা জানিয়ে দেন, বেতন বকেয়া থাকলেও পড়ুয়াদের(Students) স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া যাবে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে স্কুল বন্ধও রাখতে পারবেন না সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। সব পড়ুয়াকে ক্লাস করতে দিতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁরা এটাও জানিয়ে দেন, এই নির্দেশ শুধু জি ডি বিড়লা স্কুলের জন্য নয়, রাজ্যের সব বেসরকারি স্কুলের জন্যই প্রযোজ্য।
কোভিডকালে কলকাতা সহ রাজ্যের অনেক বেসরকারি স্কুলেই ক্লাস হচ্ছিল অনলাইনে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যায় অনলাইনে ক্লাস হলেও পুরো ফি নিচ্ছিল স্কুলগুলি। লকডাউনের কারণে সেই সময় অনেক অভিভাবকই(Parents) স্কুলের ফি দিতে পারেননি। সেই সব বকেয়া বেতন আদায় করতে বেসরকারি স্কুলগুলি নিষ্ঠুর পথ নেয়। যে সব পড়ুয়ার বেতন বাকি ছিল তাঁদের কোনও স্কুল সেই সব পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে দেয়নি, কেউ বা নতুন ক্লাসে তোলেনি। কিন্তু এদের মধ্যে সব থেকে বেশি বিতর্কের মুখে পড়েছে জি ডি বিড়লা স্কুল কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের প্রথম দিকে এই গ্রুপের স্কুলগুলি খুললেও সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বেতন বকেয়া থাকা পড়ুয়াদের। তার জেরে ওই সব পড়ুয়ার অভিভাবকেরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলায় গত ৬ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বেসরকারি স্কুলে ফি বকেয়া থাকলেও পড়ুয়াদের ক্লাস করা আটকানো যাবে না। কিন্তু অভিযোগ সেই নির্দেশ না মেনেই জি ডি বিড়লা গ্রুপ আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে কলকাতায় তাঁদের ৬টি স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পরে তাঁরা স্কুল খুললেও সেখানে নোটিস দেয়, যে সব পড়ুয়ার পুরো বেতন মেটানো আছে কেবল তারাই ক্লাস করতে পারবে। তার জেরে ওই অভিভাবকেরা আবারও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবারও দায়ের হয় মামলা। সেই মামলাতেই এদিন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় কোনও ভাবেই বাধা দিতে পারবে না স্কুল। জি ডি বিড়লা গ্রুপ যে নোটিস দিয়েছে তা ঠিক নয়। বেতন বকেয়া থাকলেও পড়ুয়াদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া যাবে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে স্কুল বন্ধও রাখতে পারবেন না সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। গত ৯ এপ্রিল যে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল স্কুলের তরফে, অবিলম্বে তা-ও প্রত্যাহার করে নিতে হবে। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। তা কেড়ে নিতে পারে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এদিন ১৪৫টি স্কুলের ফি সংক্রান্ত মামলায় যে স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট, সেই স্পেশ্যাল অফিসারকে এদিন আদালত জানিয়ে দিয়েছে আগামী ৬ জুনের মধ্যে তাঁকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।