এই মুহূর্তে




‘বামফ্রন্টকে চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা থাকলে একা লড়ে দেখাক’, চ্যালেঞ্জ কুণালের

Courtesy - Google and Twitter




নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজের দলের সব পদ থেকে সরে এসেছেন। এখন তিনি শুধুই সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। নিজেকে এখন তিনি ‘তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী’ হিসাবেই পরিচয় দিচ্ছেন। নেতা নন। সেই তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন, ‘বামফ্রন্টকে চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা থাকলে একা লড়ে দেখাক।’ তিনি কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। এদিন সকালে তিনি ট্যুইট করে এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন লাল পার্টির নেতাদের। সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, ‘এতকাল কংগ্রেসকে শ্রেণীশত্রু বলে, ইন্দিরা গান্ধিকে আক্রমণ করে, রাজিব গান্ধিকে বোফর্সের চোর বলার পর আজ কংগ্রেসের পায়ে ধরতে যাওয়া কেন? যদি এতই বামেদের সংগঠন আর সমর্থন, এতই ইনসাফ যাত্রার নাটক, দম থাকলে বামফ্রন্ট একা লড়ুক।’ কুণালের এই চ্যালেঞ্জ বামেরা গ্রহণ করবে কি করবে না সেটা সময়ই বলবে। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, তাঁরা আজ বড়ই অসহায় অবস্থায় পড়ে গিয়েছে। একদিকে কংগ্রেস তাঁদের পাত্তা দিচ্ছে না, অপরদিকে বামের ভোট রামে যাওয়া ঠেকাতে কোনও উপায়ও মাথায় আসছে না। এরাই কিন্তু বাংলার বুকে ৩৪ বছরের রাজত্বপাট চালিয়ে গিয়েছে।

লালপার্টির অন্দরে এখন যত না কংগ্রেসকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তার থেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে বিজেপিকে নিয়ে। কেননা সকলের একটাই জিজ্ঞাস্য, ‘বামের ভোট রামে যাবে না তো?’ সম্প্রতি সিপিআই(এম)’র দলীয় মুখপত্র গণশক্তিতে প্রথম পৃষ্টাজুড়ে নরেন্দ্র মোদির সরকারের(Modi Government) বিজ্ঞাপণ বেড়িয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপণ কুণাল তো ট্যুইট করে কটাক্ষ হেনেইছিলেন সঙ্গে কটাক্ষের বন্যা বড়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। কুণাল তাঁর ট্যুইটে লালঝান্ডাদের কটাক্ষ হেনে লিখেছিলেন, ‘কমরেড, এটা কীঈঈঈঈঈঈ? টাকা নিয়ে বিজেপির প্রচার? টাকার জন্য আপনারা আপনাদের পার্টির কাগজের প্রথম পাতাটাও বিজেপির কাছে বিক্রি করে দিলেন? গণশত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ গণশক্তির???? প্রকৃত গণ-শক্তি হল @AITCofficial. মানুষের আশীর্বাদে @MamataOfficial র নেতৃত্বে @abhishekaitc র সেনাপতিত্বে মা-মাটি- মানুষ লড়ছে। প্রমাণ হল, সিপিএম বিজেপির বি টিম, প্রচারক।’ লোকসভা ভোটের মুখে তাই প্রশ্ন ঘুরছে আলিমুদ্দিনের অন্দরে ‘বামের ভোট রামে যাবে না তো?’

চার দেওয়ার অন্দরে দলের এই Crisis’র কথা স্বীকারও করে নিচ্ছেন কমরেডরা। কার্যত তাঁদের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে Vote Shifting আটকানো। একুশের ভোটে বামেদের প্রাপ্ত ভোট শতাংশ কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। একই সঙ্গে স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বাংলার বিধানসভা থেকে একযোগে বাম(Left) ও কংগ্রেস ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। তবে সেই নির্বাচনের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু উপনির্বাচনে এবং পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বামেরা। সব জায়গায় না হলেও নজরকাড়া ভাবে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় বিজেপিকে তৃতীয় বা চতুর্থ স্থানে ঠেলে দিয়ে নিজেরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। কিন্তু সেই সঙ্গে গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে এটাও নজরে এসেছিল যে, রাম-বাম স্থানীয় স্তরে এক হয়ে জোট গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে বা ভোটের পরে হাতে হাত মিলিয়ে বোর্ড গঠন করছে। রাজ্যের একাধিক জেলার বহু জায়গায় সেই রাম-বাম জোট হতে দেখা গিয়েছে। যা লোকসভা ভোটেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।

উনিশের ভোটেই দেখা যায় বাংলায় বামেদের ভোটব্যাঙ্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। দ্বিগুণ গতিতে বেড়েছিলে বিজেপির ভোট শতাংশ। একুশের নির্বাচনের সময়েও রাজ্যের বিভিন্ন বিধানসভায় সেই ধারা বজায় রাখতে পেরেছিল বিজেপি(BJP)। যদিও রাম-বামের ভোট কাটাকুটি নিয়ে বিশেষ মাথা থামাতে রাজি নয় ঘাসফুল শিবির। কারণ অতীতের নির্বাচনগুলিতে লাগাতার তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক বাড়তে দেখা গিয়েছে। ‌এবারও তার পুনরাবৃত্তি হবে বলে আশাবাদী শাসক দল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘ঝাঁকের কই’ ঝাঁকে ফিরেছিল অনেকটাই। কিন্তু লোকসভা ভোটে কী হবে? ২০১৯ সালের মতো বিজেপির জন্য প্রাণপাত করবেন লালপতাকার কর্মীরা? নাকি দলের প্রার্থীকে জেতাতে ঝাঁপাবেন তাঁরা? নিচুতলার কর্মীদের এই সিদ্ধান্তের ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে বামেদের নির্বাচনী ভাগ্য। বিষয়টি সিপিএমের সঙ্গে ভাবাচ্ছে বিজেপিকেও। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বামের ভোট রামে না মিশলে বাংলার মাটিতে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ফলে, বামেদের নিচুতলার কর্মীদের মতিগতি রাম-বাম দু’পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

লোকসভা ভোটের(General Election 2024) প্রাক্কালে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে কে বড় বিপদ, তা বোঝাতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমেছে বাম নেতৃত্ব। পাড়া বৈঠক থেকে এরিয়া কমিটি— সর্বত্রই দেশের জন্য বিজেপি যে বড় বিপদ, তা বোঝানোর কাজ চলছে। সেই সঙ্গে বাম নেতারা এটা স্বীকারও করছেন যে, বাংলায় বামেদের ‘রক্তদান’র জন্যই বিজেপি ‘পুষ্ট’ হয়েছে। রাম ও বামের সমঝোতার কথা আম জনতাও ভালোই বুঝতে পারছেন। ভোটের পরিসংখ্যানে সেই আঁতাত ধরা পড়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম নেতৃত্ব স্বীকার নিয়েছিল যে, ‘আগে রাম পরে বাম’ তত্ত্ব দলীয় কর্মীদের বিভ্রান্ত করেছিল। কার্যত তা ব্যুমেরাং হয়েছিল বামেদের জন্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের এলাকা ধরে রাখার প্রয়োজনে ‘বিভ্রান্ত’ বামকর্মীদের বড় অংশই দলীয় প্রার্থীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তাতে অনেকটাই ভোট বেড়েছিল বামেদের। যাত্রা ভঙ্গ হয়েছিল বিজেপির। লোকসভা নির্বাচনে নিচুতলার বাম কর্মীরা কী ভূমিকা নেয়, রাজনৈতিক মহলের নজর সেদিকেই। সঙ্গে থাকছে কুণালের চ্যালেঞ্জ।   




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দিঘায় মমতার উদ্যোগে জগন্নাথ মন্দির তৈরিকে স্বাগত অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার

‘এক দেশ, এক ভোট মানব না’ ফের হুঙ্কার মমতার

পাইকারি বাজারে আলুর দাম কমলেও মানিকতলা বাজারে বেশি দামে বিকোচ্ছে কাঁচামাল

ফের সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি, নতুন তারিখ কবে?

লাগামছাড়া গতিতে ‘রেড অ্যালার্ট’, রেষারেষি রুখতে ‘চাবিকাঠি’ থাকছে পরিবহণ দফতরের হাতে

সকালে পারদ নামল ১৩.৮ ডিগ্রিতে, আজ মরসুমের শীতলতম দিন

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর