নিজস্ব প্রতিনিধি: ফ্ল্যাটের মালিক জেলবন্দী। অথচ তাঁর নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে টাকা। সেই রহস্যের সন্ধানেই মঙ্গলবার দুপুরে নিউটাউনে(Newtown) কুন্তল ঘোষের(Kuntal Ghosh) বেনামি ফ্ল্যাটে হানা দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED বা Enforcement Directorate’র আধিকারিকেরা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত জেলবন্দি কুন্তল ঘোষের অ্যাকাউন্টে কীভাবে টাকা আসছে সেটাই খতিয়ে দেখতে চাইছেন ED’র আধিকারিকেরা। নিউটাউনে এদিন যে ফ্ল্যাটে তাঁরা হানা দিয়েছেন সেই ফ্ল্যাটের আসল মালিক কে, সেখানে কারা ভাড়া থাকতেন – সেসব বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে বলে খবর।
নিউটাউনে City Center-2’র কাছে এক অভিজাত আবাসনে রয়েছে ওই ফ্ল্যাট। ঘটনাচক্রে ওই আবাসন থেকেই কুন্তলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ED’র আধিকারিকদের দাবি, রাজারহাটে কুন্তলের বেনামি ফ্লাটে ভাড়া নিয়ে থাকতেন গরু পাচার মামলায় ধৃত এনামুলের ভাগ্নে! ভাড়া মেটানো নিয়ে তাঁর সঙ্গে কুন্তলের সমস্যা তৈরি হয়। এর পরই ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দেয় কুন্তল। বিপুল অঙ্কের সেই অর্থ কুন্তলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। তার তদন্তে ED’র আধিকারিকরা মঙ্গলবার কুন্তলের ওই ফ্ল্যাটে যান। এনামুলের ভাগ্নের এই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকার বিষয়টি তাঁদের বেশি ভাবাচ্ছে। গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যে জেলে এনামুল। কলকাতায় একাধিক প্রভাবশালীর সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা, আত্মীয়দের কাছে নিজের প্রভাব বিস্তারই শুধু নয়, তাঁদেরও যথেষ্ট অর্থবান হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে সে। সবমিলিয়ে, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং গরু পাচারে আর্থিক নয়ছয়ের বিষয়টি একই সুতোয় বাঁধা রয়েছে বলে মনে করছেন ED’র তদন্তকারীরা। নিউটাউনে কুন্তলের ওই ফ্ল্যাট কে কিনেছেন? এখন কে থাকেন? কাদের যাতায়াত? এই সমস্ত বিষয় জানতে চান তাঁরা।
এদিকে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ED’র হানাদারিতে বিপুল অঙ্কের টাকা উদ্ধারের ঘটনা সামনে এসেছে। গত ৪ ও ৫ তারিখে যে তল্লাশি হয় সেই তল্লাশির ভিত্তিতেই টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে ED। বাঁকুড়ার দুটি কোম্পানি থেকে মিলেছে ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা আর হাওড়ার একটি কারখানা থেকে মিলেছে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। ৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সেই তল্লাশি ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে। সেই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ১৮ কোটির বেশি টাকা উদ্ধার হয়েছে। তবে ইডির অনুমান, আরও অর্থের হদিশ মিলবে। বাঁকুড়ার যে দুটি কোম্পানি থেকে ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে সেগুলি হল AJ Agrotek ও AJ Royel Private Limited। হাওড়ায় যে কারখানা থেকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা মুদ্ধার হয়েছে সেটির নাম Ankit India।