নিজস্ব প্রতিনিধি: মানুষের মধ্যে আজও নাক সিঁটকানোর প্রবণতা রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে দেখে। সমাজে আজও দমন পীড়ন চালানো হয় এই ধরণের মানুষের উপর। সেই আবহে মন ভালো করে দেয় একাদশ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের পরিসংখ্যান। রেকর্ড সংখ্যক তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়া নিজেদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করেছে। প্রসঙ্গত এ বছরই প্রথম পুরুষ ও মহিলার বাইরে অন্য লিঙ্গ পরিচয়কে নথিভুক্ত করার সুযোগ রেখেছিল সংসদ।
২০২২ সালে প্রথমবার একাদশ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের (Registration) ফর্মে লিঙ্গ পরিচয়ে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’-র (Third Gender) অপশন রেখেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। অনলাইনে ফর্ম ফিলআপ হয়েছে এ বছর। একাদশ শ্রেণির সেই রেজিস্ট্রেশনে দেখা গিয়েছে প্রায় ৫০০ পড়ুয়া নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ পরিচয় দিয়েছে। এতদিন নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়াদের পরিচয় জানানোর কোনও সুযোগ ছিল না রেজিস্ট্রেশনের ফর্মে।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান – তিনটি শাখাতেই পুরুষ বা মহিলা না লিখে তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে নিজদের পরিচয় দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছে পাঁচশোর বেশি পড়ুয়া। বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে এই একশোর কম হলেও কলা শাখায় সংখ্যাটা চারশো পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই পরিচয় জানানোর সুযোগ থাকলেও স্কুল স্তরে এই পরিচয় জানানোর কোনও সুযোগ ছিল না। তবে চলতি বছর থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (WBHSC) স্কুলশিক্ষার ক্ষেত্রে এই পরিচয় জানানোর স্বীকৃতি দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, তৃতীয় লিঙ্গকে আইনত স্বীকৃতি দেওয়া হয়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও মেলে স্বীকৃতি। স্কুলশিক্ষাতেও সেই স্বীকৃতি দিতে একাদশ শ্রেণির অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের পোর্টাল তৈরির সময়ই লিঙ্গ পরিচয়ে পুরুষ, মহিলার সঙ্গে ‘অন্যান্য’ তথা তৃতীয় লিঙ্গের সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এর মাধ্যমে আমরা একটা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছি বলে মনে করছি। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।