নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধীদের, বিশেষ করে বিজেপির অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের একাধিক প্রকল্পের নাম বদলে দিয়ে তা নিজেদের প্রকল্প হিসাবে তুলে ধরছে বাংলার বুকে ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। তার মধ্যে অন্যতম হল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা(Pradhanmantri Awas Yojna)। সেই প্রকল্পের টাকায় বাংলায় যে প্রকল্প চালানো হচ্ছে তার নাম ‘বাংলার বাড়ি’(Banglar Bari)। অন্তত এমনটাই অভিযোগ গেরুয়া ব্রিগেডের। এবার সেই বাংলার বাড়ি প্রকল্প নিয়েই রাজ্যের ২১টি পুরসভাকে সতর্ক করে দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। কেননা দফতরের নিজস্ব রিপোর্টে ওই ২১টি পুরসভায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের রূপায়ণের ছবি খুবই খারাপ ভাবে উঠে এসেছে। এর জেরে ফিরহাদ ওই ২১টি পুরসভার চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলাদা করে একটি বৈঠক করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী। সেখানেই তিনি ওই ২১টি পুরপ্রধানের সামনে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন নোট বাতিলের নয়া মামলা সুপ্রিম কোর্টে, নেপথ্যে এক বাঙালি
বাংলার বাড়ি প্রকল্পতি সাধারণ গ্রামীণ এলাকায় চালানো হয়। শহরে সেই প্রকল্পই চালানো হয় ‘হাউজিং ফর অল’ প্রকল্প নাম দিয়ে। শহরে যে সব গরিব মানুষ বসবাস করেন ও নিজেদের বাড়ি নেই তাঁদেরকেই এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়। প্রকল্পে উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরি করার জন্য ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। উপভোক্তা, প্রথম কিস্তির টাকা নিয়ম মেনে খরচ করতে পারলে তাঁকে দেওয়া হয় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র সরকার বাংলাকে ৫০০ কোটি টাকা দিলেও রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। বাংলার বুকে ১২০টি পুরসভা ও ৭টি পুরনিগমে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব মানুষদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ রাজ্যের ২১টি পুরসভায় এই প্রকল্পের অধীনে কাজ হয়েছে নামমাত্র।এই ২১টি পুরসভার মধ্যে যেমন উত্তর-২৪ পরগনা জেলার নৈহাটি ও বনগাঁ পুরসভা রয়েছে তেমনি রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভাও। যেমন আছে বীরভূম জেলার সিউড়ি ও রামপুরহাট পুরসভা, তেমনি আছে হুগলির তারকেশ্বর ও নদিয়ার কল্যাণী পুরসভাও।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েতের ভোট হবে ব্যালটেই, বাক্সে থাকবে কিউ আর কোড
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের রিপোর্টে সাফ জানানো হয়েছে, ওই ২১টি পুরসভা তরফে এই প্রকল্প নিয়ে ছিঁটেফোঁটা আগ্রহ দেখানো হয়নি। ওই পুরসভাগুলি শতাধিক বাড়ি তৈরির বরাদ্দ পেলেও বাড়ি তৈরি করেছে মাত্র ২০-৩০টি। প্রকল্পের টাকা পুরসভাতেই পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। আমজনতা এই প্রকল্পের সুবিধাই পাচ্ছেন না। আর তার জেরেই এই পুরসভার পুরপ্রধানদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পে ভালো কাজ করে দেখাতে হবে। না-হলে ব্যর্থ পুরসভার বরাদ্দ বাড়ি অন্য পুরসভাকে দেওয়া হবে। মূলত যেসব পুরসভা ভালো কাজ করছে, তারাই পাবে এই সুবিধা। ওই ২১টি পুরসভার বরাদ্দ কেটে নিলে আর টাকা দেওয়া হবে না।