নিজস্ব প্রতিনিধি: শুরু করলেন মোয়া দিয়ে। পথে পড়ল মধু। জলস্বপ্ন(Jalswapna Project) বুনে আশ্বাস দিলেন আবাসের। পাশে দাঁড়াতে বার্ধক্য ভাতার প্রসঙ্গও আনলেন টেনে। দেখালেন উন্নয়নের অভিমুখ। আর বললেন সকলকে শান্তি বজায় রাখতে। এটাই মঙ্গলবারে জয়নগরের(Joynagar) বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সভার নির্যাস। এদিন তিনি জয়নগরের মোয়ার খুবই সুখ্যাতি করেন। বলেন, ‘কেউ বাড়িতে এলে জয়নগরের মোয়া খাওয়াবেন তো? গাছের খেজুর গুড়ও খাওয়াবেন। অতিথিদের মোয়া দেবেন। বিয়েতে এক প্যাকেট মোয়া(Moya) গিফট দেবেন। সোনা দানা পেলে খুশি হয়। কিন্তু সেটা তো খেতে পারে না। জয়নগরের মোয়া জিআই পেয়ে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছে। কারিগরদের শুভেচ্ছা। আমরা আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে জয়নগরে মোয়া হাব। জয়নগরের বিধায়ক আমায় প্রচুর মোয়া দেয়। আমি খেলে সেগুলো মোটা হয়ে যাব। তাই বিলিয়ে দিই। বিভাস আমায় অনেক ফল পাঠায়। ওরা ভাবে সব আমি খাই। কিন্তু আমি তো একবার সকালে খাই। একটু চা খাই। আর রাতে সামান্য কিছু। এটা অনেক দিনের অভ্যাস।’
এর পাশাপাশি মধু(Honey) নিয়েও বার্তা দেন মমতা। বলেন, ‘সুন্দরবনের মধুও জিআই পেয়েছে। জেলার মুকুটে দুটো স্বর্ণ পালক। মধু খান, মধু খাওয়ান। মধু খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভালো। আপনারা সুন্দরবন থেকে অনেক কষ্ট করে মধু নিয়ে আসেন। এটা আপনাদের সেই কষ্টের জয়। আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা। আগামী দিনে দেখবন বিশ্বজুড়ে আপনাদের মধুর চাহিদা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সবাই কদর করছে।’ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার প্রশ্নে। বলেন, ‘অনেকে বলছে হাম ঘর ঘর মে জল দেতা হ্যায়। নেহি দেতা হ্যায়। ঘরে জল মা মাটি মানুষের সরকার দেয়। ২০২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে টার্গেট করেছি সব বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল যাবে। ১৯ লক্ষ্য মানুষের বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তুলে আনেন আবাস যোজনার প্রসঙ্গও। বলেন, ‘২০১১ সালের পর থেকে পঞ্চাশ লক্ষ লোকের বাড়ি তৈরি হয়েছে। সেই আবাস যোজনার আমরা জন্যও আমরা টাকা পাব কেন্দ্রের কাছ থেকে। তাই বাড়ি তৈরি যাদের বাকি আছে তাদেরও বাড়ি দেব টাকা পেলে। বয়স্কদের বার্ধক্যভাতা কেন্দ্র সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। আমি চেষ্টা করছি এটা অন্তত ধাপে ধাপে করে দেওয়া যায় কিনা। সেটা পরে ঘোষণা করব। ব্যাপারটা আমার মাথায় আছে।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জোর দিয়েছেন এলাকার উন্নয়ন ও শান্তিশৃঙ্খলার প্রশ্নেও। জানান, ‘৩১ জানুয়ারির মধ্যে পড়ুয়াদের সাইকেল ও ট্যাব দিয়ে দিতে হবে। এখানে ঝড় জলে রাস্তা ভেঙে গেছে জানি। ২০২৩-২৪ এ আরও ১২ হাজার গ্রামীণ রাস্তা করছি। আরও ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হবে। জরুরি জায়গা বেছে নিয়ে আগে কাজ হবে। তার জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি। ৮.৫ লাখ লোক কাজ পাবেন এই আগামী দিনের পথশ্রী প্রকল্পে। কেন্দ্র টাকা না দিলেও জব কার্ড হোল্ডারদের দিয়ে ৪০ পার্সেন্ট কাজ করেছি। সংখ্যালঘুদের জন্য মেটিয়াবুরুজে বড় টেক্সটাইল হাব তৈরি করেছি। তারা দর্জির কাজ ভাল করে। তাঁরা পড়াশোনায় উন্নতও হচ্ছে। আমার সেল্ফ হেল্ফ গ্রুপের মেয়েরা আছে। সব থেকে বেশি সেল্ফ হেল্ফ গ্রুপ বাংলায় আছে। দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়নে বাংলা প্রথম। এখানে কবরস্থান, তীর্থস্থান, শশ্মান সব উন্নত হচ্ছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে এখনও যার ওঠেনি তাঁরা নাম লেখান। দুয়ারে সরকার ও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী কাছে নাম লিখিয়েছেন। পরিষেবা পাননি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা তাদের জন্য সুখবর ঘোষণা করব। আমায় কয়েকটাদিন সময় দিন। ভাঙড়, বজবজ, মেটিয়াবুরুজ আমার পরিচিত। এই জায়গাগুলোতে কিছু ভাড়াটিযা গুণ্ডা দিয়ে কয়েক দিন আগে কিছু মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনকে বলব কড়া হতে। এত টাকা পায় কোথা থেকে ? মানুষ খেতে না পেলে একটা টাকা দেয় না। আর মানুষ মারতে ১৫লক্ষ টাকা খরচ করে গুন্ডা আমদানি করবে এটা হবে না। বাংলা শান্তির জায়গা। বাংলায় ভেদাভেদ হবে না।’