নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসাবে। সেই দিনে কলকাতার বুকে দাঁড়িয়েই বিজেপির বিদ্বেষবার্তাকে নিশানা বানালেন বাংলার অগ্নিকন্যা তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন তিনি দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকেই তিনি রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিককে গতকাল যে ভাবে ‘খলিস্তানি’ বলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) কটাক্ষ করেছিলেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘পাঞ্জাবি অফিসারের কী দোষ ছিল? পাগড়ি পরলেই খলিস্থানি বলে দেবে।’ বস্তুত গতকাল বিকাল থেকেই শুভেন্দুর ‘খলিস্তানি’ মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কলকাতা সহ রাজ্য ও দেশজুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমে পড়েছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ। সর্বত্রই দাবি উঠেছে শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে পাঞ্জাবিদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
সন্দেশখালি(Sandeshkhali) যাওয়ার পথে গতকাল অর্থাত্ মঙ্গলবার ধামাখালিতে রাজ্য পুলিশের(West Bengal State Police) ইনটালিজেন্স ব্রাঞ্চের স্পেশ্যাল সুপার(Special Superintendent of Intelligence Branch) জশপ্রীত সিংকে(Jashpreet Singh) ‘খলিস্তানি’ বলে যে কটাক্ষ(Khalistani Remarks) শুভেন্দু করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধেই এখন দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু শুভেন্দু এটা মানতে চাননি যে তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন। বরঞ্চ বেশ জোর গলায় দাবি করেন, এই মন্তব্য তিনি করেননি। একই সঙ্গে রীতিমত হুমকির সুরে তিনি জানিয়েছিলেন, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে না পারলে তিনি মামলা দায়ের করবেন। কিন্তু এদিন তৃণমূলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়াতে একের পর এক ভিডিও ছেড়ে সেই মন্তব্য যে শুভেন্দুই করেছিলেন সেই প্রমাণ তুলে ধরা শুরু হয়। এদিন ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সেই ইস্যুতেই নাম না করে নিশানা বানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাঞ্জাবি অফিসার কী দোষ করল, তুমি একটা পাঞ্জাবি অফিসার আছে বলে তুমি তাকে খালিস্তানি বলে দেবে? পাগড়ি দেখলেই খলিস্তানি, মুসলিম দেখলেই পাকিস্তানি। কে বলার অধিকার দিয়েছে? সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, তুমি যখন খুশি যা খুশি যাকে খুশি বলে দেবে। কত মুসলিম IAS, IPS, WBPS আছে। তুমি তাঁদের দেখলেই পাকিস্তানি বলে দেবে। সেনাবাহিনীতে তো কত পাঞ্জাবি আছে, গোর্খা আছে, এদের রেজিমেন্ট আছে, তুমি কী তাঁদের খলিস্থানি বলে দেবে? কেউ যদি ভাবেন চ্যানেলে বসে বাংলা ভাষা কে অপমান করবেন, তো জানবেন ভুল করছেন। বাংলা এত সহজে মাথা নত করে না। সূযয্র যখন উদিত হয় তখন আমাদের মানবিকতাও জাগ্রত হয়। সে তো ডিউটি করছিল।’ বস্তুত এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী গতকালই সরব হয়েছিলেন। এদিনও হলেন।