নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টের (KOLKATA HIGH COURT) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কাশ্মীরে (KASHMIR) গিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। রীতিমত হেনস্তাও হন। ভূস্বর্গের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (AMIT SHAH) চিঠি দিলেন বিচারপতি। কাশ্মীরের দ্রাসে গিয়ে স্তম্ভিত হয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিচলিত। প্রসঙ্গত, অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন তিনি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করবেন। তা যে আদৌ হয়নি, তা বিচারপতি (ABHIJIT GANGOPADHAY) ‘হেনস্তা’র চিঠিতেই পরিষ্কার।
কলকাতা হাইকোর্টের এজলাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, তাঁর ধারণা কাশ্মীরের একাধিক পুলিশ (POLICE) আধিকারিক পোষণ করেন দেশবিরোধী মনোভাব। তিনি বলেন, ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন লে- লাদাখ। হান্দুরগ্রাম পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি তাঁর। দ্রাস থেকেই সমস্যা। দ্রাসে পৌঁছে তিনি দেখেন কনভয়ে কোনও পুলিশ আধিকারিক নেই। এমনকি কর্মী পর্যন্ত নেই। তাঁরাই নিয়ে যান পথ চিনিয়ে। বিচারপতি বলেন, কারণ জানতে তিনি গিয়েছিলেন দ্রাস থানায়। দেখতে পেয়েছিলেন পুলিশ অফিসার ঘুমোচ্ছিলেন। এরপরে বিচারপতিকে ওয়ার মেমোরিয়াল ঘুরিয়ে দেখিয়েছে এসএইচও। বলা হয়েছিল, এরপর থেকে প্রটোকল অফিসার দেওয়া হবে বিচারপতিকে। তা শুনে শ্রীনগর গিয়েছিলেন বিচারপতি। তবে তা আদৌ হয়নি। শ্রীনগর নিয়ে যেতে তিনি অনুরোধ করেন সোনমার্গ পুলিশকে। কিন্তু সেখানের এসএইচও বলেন, থানার গাড়ি খারাপ। বিচারপতি দেখেছিলেন থানার ২৮ টি গাড়ি আছে, সবগুলিই সচল। বিরক্ত হয়ে সোনমার্গের এক হোটেলেই রাত্রে থাকেন তিনি।
বিচারপতির আরও অভিযোগ, দ্রাসের পুলিশের মধ্যে দেশ বিরোধী মনোভাব আছে। তিনি এমনটাই মনে করেন, বলে জানিয়েছেন। এরপরেই তিনি বলেন, এক পুলিশ কর্মী তাঁকে বলেছিলেন, তুরতুক আসলে পাকিস্তানের। ভারত এই জায়গা জোর করে দখল করেছে। ওই পুলিশ কর্মী তুরতুকের বাসিন্দা। বিচারপতি বলেন, সোনমার্গের পুলিশদের মনোভাব একই। এমনকি বিচারপতির দাবি, সরকারের পদস্থ আধিকারিকদের একাংশের মনোভাব একই। বলেন, শ্রীনগরে প্রটোকল অফিসারের বদলে তিনি পেয়েছিলেন প্রটোকল অফিসের এক সাধারণ কর্মী। ব্যবস্থা করা হয়েছিল, খারাপ মানের হোটেল। বিচারপতির অভিযোগ, ওই প্রটোকল কর্মী তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘জাহান্নামে যাও’! এই সমস্ত ঘটনা বিস্তারিত জানিয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন, বলে জানান বিচারপতি। চিঠিতে তিনি ভূস্বর্গের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বারবার বলেছিলেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করবেন। দীর্ঘ ৮ বছর কেটে গেলেও তা যে হয়নি, তা প্রমাণ করল বিচারপতির পাঠানো চিঠিই।