নিজস্ব প্রতিনিধি: যত রাত বাড়ছে ও দিন যাচ্ছে ভিড় ততই বাড়ছে শহর কলকাতায়। প্রত্যেকদিন রেকর্ড গড়ছে শহরের ভিড়। যানবাহনের তুলনায় মানুষের ভিড় বাড়ছে শহরের রাস্তায়। পায়ে হেঁটে ঠাকুর দেখাতে দক্ষ সকলে। কিন্তু করোনা নামক কোনও জীবাণু বাতাসে রয়েছে এটা মানতেই নারাজ সাধারণ জনতা। ভ্যাকসিন নেওয়া হোক কিংবা না নেওয়া হোক মানুষ ভিড় বাড়াচ্ছে পুজো মণ্ডপের দিকে। তবে মহাষষ্ঠীতে ভিড়ে ঠাসা গোটা শহর। ছাপিয়ে গিয়েছে মহাষষ্ঠীর ভিড়কে। তবে রাস্তায় ট্রাফিক কম। শুধুমাত্র বুর্জ খলিফা দেখতে যত চাপ বাড়ছে ভিআইপিতে। কিন্তু করোনার চোখ রাঙানির মাঝে এই ভিড়টাই চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। বিশেষ করে মাস্ক না পরায়, স্যানিটাইজার ব্যবহার না করায় চিন্তা বাড়ছে সর্বত্র।
প্রশাসন কিংবা পুজো উদ্যক্তোরা বিশেষ ব্যবস্থা নিলেও উৎসাহী জনতার কাছে অসহায়। বারবার বিশেষজ্ঞরাই বারণ করেছেন করোনার তৃতীয় ঢেউ এখনও বাকি, অপেক্ষায় রয়েছে মারণরোগ থাবা বসানোর জন্য। কিন্তু কে কার কথা শোনে। তবে একা বুর্জ খলিফা অর্থাৎ শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের থিম দেখতেই মানুষের যে ঢল বিগত তিনদিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল, মহাসপ্তমীতে তা দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। করোনা বিধি মেনেই জেলার ক্লাব গুলি পুজো করলেও কলকাতায় চাকচিক্য ও জৌলুস ফিরেছে এবারের দুর্গাপুজোতে। তাই উপচে পড়েছে ভিড়। শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর একই চিত্র। মহাষষ্ঠীতে মানুষের ঢল করোনার বাড়বাড়ন্তের দিন মনে করাচ্ছে ফের। স্বাস্থ্য বিধি নেই, দূরত্ববিধি নেই, মাস্ক নেই হাতে ব্যবহার হচ্ছে না স্যানিটাইজার। বনগাঁ লোকালকে হার মানাচ্ছে কলকাতার ঠাকুর দেখার ভিড়।
আদালতের নির্দেশ ছিল যারা করোনার ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন তারা প্রবেশ করতে পারবেন মণ্ডপে। কিন্তু অশান্তি এড়াতেই সমস্ত পুজো মণ্ডপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না সাধারণ দর্শনার্থীকে। আর তাই মণ্ডপের বাইরে নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব মেনে ঠাকুর দেখার জন্য মানুষের ভিড় বাড়ছেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের প্রতিটি মণ্ডপেই কমবেশি ভিড় রয়েছে। তবে একডালিয়া, সিংহী পার্ক, দেশপ্রিয় পার্ক, চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি, নাকতলা উদয় সংঘ, বেহালা নতুন দলের মতো হাই ভোল্টেজ পুজোগুলিতে ভিড় রয়েছে দেখার মত। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুর্জ খলিফা দেখতে এতটাই ভিড় হয়েছিল যে এদিন থমকে গিয়েছিল উল্টোডাঙা ব্রিজ। ভিআইপি রোডেও ট্রাফিকের গতি ছিল স্লথ। এয়ারপোর্টগামী গাড়িগুলিকে চিংড়িঘাটা উড়ালপুল, নিউটাউন দিয়ে ঘোরানো হচ্ছিল এদিন। লালাবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাস্তায় ভিড়ে মাস্ক না পরার অপরাধে ১৫৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। মহামারী আইন ভঙ্গের জন্য ১০ জনকে আটক করা হয়। প্রকাশ্যে থুতু ফেলার অপরাধে আটক করা হয় ছ’জনকে।
রাজ্যে প্রথম ঢেউ-এর পর করোনা বেড়েছিল একুশের নির্বাচনের প্রচারের জন্য। অপেক্ষায় রয়েছে তৃতীয় ঢেউ। আইসিএমআর বলেই দিয়েছে দুর্গাপুজো সুপার স্প্রেডারের আকার ধারণ করতে পারে। তাই সাবধান, কিন্তু থোড়াই কেয়ার আমজনতার। মহাপঞ্চমীতেই এই ভিড় আর বাকি চারদিন কী চিত্র ফুটে উঠবে সেটাই দেখার।