নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রের(Central Government) থেকে বাংলার(Bengal) বকেয়ার পরিমাণ ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা। বার বার চেয়েও সেই টাকা মেলেনি। এমনকি মেলেনি ১০০ দিনের কাজের মজুরি(Wages of 100 Days Work Project) বাবদ ৭ হাজার কোটি টাকাও। এক সপ্তাহ আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ৭ দিনের মধ্যে সেই বকেয়া টাকা না মেটালে তিনি ফের ধর্নায় বসবেন। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে এদিন অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর ১টার কিছু পর থেকেই কলকাতার(Kolkata) রেড রোডে টানা ৪৮ ঘন্টার ধর্না(Dharna) শুরু করলেন মমতা। তাঁর সঙ্গে ধর্নামঞ্চে সামিল হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীদের পাশাপাশি দলের নেতানেত্রীরাও। আছেন অগণিত তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকেরাও। কেন্দ্রের ওপর মমতার এই চাপ বাড়ানোর কৌশল যে কাজেও দিচ্ছে তার নমুণা অবশ্য এদিন সকালেই মিলেছে। কেন্দ্র থেকে জল জীবন মিশন প্রকল্পের খাতে বাংলাকে প্রায় হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
এদিন ধর্না মঞ্চে উপস্থিত হয়ে মমতা সবার আগে দেশের সংবিধানের প্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন। তারপর ওঠেন মূল ধর্নামঞ্চে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা এই ধর্না চলবে। সেই কর্মসূচীর জন্য যাতে রাজ্যের প্রশাসনিক কাজের ওপর কোনও চাপ না পড়ে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ধর্না মঞ্চ থেকেই কাজ করে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য মূল ধর্না মঞ্চের পাশে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী কার্যালয়। একই সঙ্গে এদিনই এই ধর্নামঞ্চেই দলের দুই বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তৃণমূল নেত্রী। ঘটনাচক্রে এদিন অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় স্তরে মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ নিশ্চিত কর্মসংস্থান আইন দিবস পালিত হচ্ছে। আর এদিনেই ধর্নায় বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪’র ভোটের আগে এই ধর্না কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওপর কতটা চাপ বাড়ায় সেটা আগামী দিনে বোঝা যাবে।
এদিন মমতা নিজে কালো পাড়ের শাড়ি পড়ে এসেছেন ধর্নামঞ্চে। যারা যারা মঞ্চে রয়েছেন তাঁরাও সকলে কালো শাড়ি বা পোষাক পড়ে এসেছেন। ধর্না মঞ্চের নীচের দিকে যারা ধর্নায় সামিল হয়েছেন তাঁরাও কালো পোষাক পরেই এসেছেন। অর্থাৎ এটা পরিষ্কার যে এদিনের ধর্না থেকে মমতা কার্যত গোটা দেশকে বার্তা দিতে চাইছেন যে, গ্রামের গরীব মানুষদের ১০০ দিনের কাজের মজুরি না দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মোদি সরকার তা গোটা দেশের কাছে লজ্জার। এই ঘটনার প্রতিবাদ করা উচিত। তৃণমূল সেটাই করছে। কেননা কালো রঙ প্রতিবাদের প্রতীক, লজ্জার প্রতীক। মমতা ধর্না মঞ্চে বসে সেই কালো রঙকেই তার প্রতিবাদের হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছেন। উল্লেখ্য, গতবছরও এই একজায়গাতেও মমতা ধর্নায় বসেছিলেন কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে। এবারে আবারও বসলেন কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে। চাইলেন ১০০ দিনের কাজের মজুরির টাকা।