নিজস্ব প্রতিনিধি: কেউ বলবেন অনুসরণ, কেউ বা বলবেন অনুকরণ। মোদ্দা কথা কিন্তু একটাই বাংলার মেয়ের দেখানো পথেই এবার দেশের সরকার। বাংলা দখলের ডাক দিয়ে যে দলের নেতারা সর্বক্ষণ হুঙ্কার দিচ্ছে, হুমকি ধমকি দিচ্ছে তাঁদেরই দলের নেতারা যারা কেন্দ্রে সরকার চালাচ্ছে তাঁরাই এবার বাংলার মেয়ের দেখানো পথে হাঁটা দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন। বাংলার বুকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড(Sasthasathi Card) নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ, তৃণমূল কংগ্রেস(TMC) পরিচালিত মা-মাটি-মানুষকে আক্রমণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) আক্রমণ করেন যারা সব থেকে বেশি সেই বিজেপির সরকারই এবার মমতার দেখানো পথে হাঁটা দিল। মানে পাতি বাংলায় মমতার দেখানো পথেই হাঁটা দিলেন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় খরচের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্রীয় সরকার আনতে চলেছে বাংলার ধাঁচের কমিশন। আনা হচ্ছে ‘দি ন্যাশনাল কমিশন ফর কন্ট্রোলিং মেডিকেল ইনফ্লাশন বিল ২০২২’(TNCCMI Bill)। এই বিল কার্যত মমতার কাজকেই যেন আরও বেশি মান্যতা দিয়ে দিল।
আরও পড়ুন বছর শেষে দুয়ারে কোটি, চাহিদা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসাথীর
২০১৭ সালে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনেছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন বা ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন। এবার সেই পথ ধরেই হাঁটা দিতে চলেছে মোদি সরকার। তৈরি হতে চলেছে ৭ সদস্যের এই কেন্দ্রীয় কমিশন। ওই ৭জনের মধ্যে একজন ‘চেয়ারম্যান’, একজন ‘ডেপুটি চেয়ারম্যান’ ছাড়াও আরও ৫জন সদস্য থাকবেন। এই কমিশন গড়া হচ্ছে মূলত ৬টি সমস্যার সমাধান করার লক্ষ্য নিয়ে। এক, দেশজুড়ে চিকিৎসা খাতে খরচে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ। দুই, সমস্ত অপরিহার্য ওষুধ, রোগ ও রক্তপরীক্ষার খরচ স্থির করা। তিন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে সব ধরনের চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বসীমা বাঁধা। চার, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় খরচ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় নীতি তৈরি করা। পাঁচ, চিকিৎসার খরচ নির্ধারণের আদর্শ পন্থা স্থির করা ও সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ছয়, দেশজুড়ে সমস্ত প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা।
আরও পড়ুন শুভেন্দুর সিএএ ডেটলাইন নিয়ে প্রশ্ন বঙ্গ বিজেপিতেই
এই জাতীয় কমিশনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালে এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ শতাংশ চিকিৎসা খরচ বেড়েছে বাংলায়। এপ্রিল ২০২২-এ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ৭.২১ শতাংশ চিকিৎসা খরচ বেড়েছে দেশে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, চিকিৎসা ও রোগ-রক্ত পরীক্ষার খরচের কোনও সাম্যতা নেই দেশে। চিকিৎসা খরচ নিয়ন্ত্রণে বাংলার মতো কমিশন তাই এবার দেশের বুকে প্রথমবার গঠিত হতে চলেছে। এতে লাভবান হবেন দেশের মানুষ। চিকিৎসা খরচে সাম্যতা আসবে। সূত্রের খবর, এই কেন্দ্রীয় কমিশনের ক্ষমতা থাকবে আদালতের মতোই। তারা বিধিও তৈরি করতে পারবে। দেশের যে কোনও নাগরিককে কমিশনের কাছে হাজির করতে পারবে। চাইতে পারবে যে কোনও সরকারি নথি। দিতে পারবে নির্দেশও।
