নিজস্ব প্রতিনিধি: দিল্লির পথে রওয়ানা দিচ্ছে তৃণমূলের ব্রিগেড। লক্ষ্য, ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work Project) টাকা আদায় করা। কিন্তু শুনলে চমকে যাবেন, একা বাংলা(Bengal) ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার গেরুয়া ষড়যন্ত্রের শিকার হয়নি। হয়েছে দেশের আরও ১৭টি রাজ্য। আর তার জেরে এই ১৮টি রাজ্যের খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষরা সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন। কার্যত দেশের সবকটি অবিজেপি শাসিত রাজ্যই(Non BJP Ruling State) এই নোংরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। দেশের সবকটি অবিজেপি শাসিত রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের খাতে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওনা রয়েছে। তার জেরে একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালু রাখতে সমস্যায় পড়ছে রাজ্যগুলি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই বঞ্চনা ও বৈষম্য বিজেপি(BJP) বিরোধী হাওয়াকে ক্রমশই জোরদার করে তুলবে ২৪’র ভোটের(General Election 2024) আগে।
বাংলার পঞ্চায়েত দফতরের হিসাব মতো ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ কেন্দ্রের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাওনা রয়েছে ২৭৭০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গের পরেই রয়েছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান। তাদের বকেয়া পাওনা প্রায় ৯৭৯ কোটি টাকা। আরজেডি এবং জেডিইউ শাসিত বিহারের ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ ৬৬৯ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। সবমিলিয়ে মোট ১৮টি রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা পায়। শুধু এই মজুরিই নয়, ১০০ দিনের কাজের জন্য কোদাল, ঝোড়া সহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি এবং সাজ-সরঞ্জাম কিনতে হয়। তার ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র। সেই টাকাও বকেয়া রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। ৩০টি রাজ্য মিলিয়ে সেই বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬২৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলা একাই ২৮১৩ কোটি পাবে। ফলে যারা এই সব জিনিসপত্র দিতেন তারা তা সরবরাহ করা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার জেরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের গতি আগের থেকে অনেকটাই শ্লথ হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকরা।
আর এর জেরে দেশের সব অবিজেপি শাসিত রাজ্যেই শ্লথ হয়েছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের গতি। বাংলার বুকে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে শ্রমদিবস তৈরি হত গড়ে ৭৯.৯১ শতাংশ। এখন সেটা নেমে এসেছে ৪৯.৮৯ শতাংশে। আরও এক অবিজেপি শাসিত রাজ্য বিহারের অবস্থাও তথৈবচ। ২০১০-২০২০ সাল পর্যন্ত বিহারে এই প্রকল্পে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে সেটাই নেমে গিয়েছে ২৫ হাজারে। তার ফলে সামগ্রিক ভাবে গোটা দেশে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সাফল্যের হার কমছে। ২০১৮-’১৯ সালে পরিবার পিছু কাজ পেয়েছিল ৫০.৮৭ শতাংশ। ২০২২-’২৩ সালে সেটা নেমে গিয়েছে ৪৭.৮৪ শতাংশে।