এই মুহূর্তে




মোদির বাঙালিবিদ্বেষ থেকে, দিলীপের উবাচ! কলমে বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন বাবুল




নিজস্ব প্রতিনিধি: বুধবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন বাবুল সুপ্রিয়। এবারে সোজা প্রধানমন্ত্রী তথা নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বসেন। বাবুল জানান ‘প্রধানমন্ত্রী বাঙালিদের উপর ভরসা করছেন না। সাত বছরে কোনও ক্যাবিনেট মন্ত্রী তো ছেড়েই দিন, বাংলা থেকে কাউকে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও করা হয়নি।’ যার পাল্টা ইট-পাটকেল খেতে হয়েছে বাবুলকে। তাঁর প্রাক্তন দলের নেতারা বাবুলের বিস্ফোরক অভিযোগ খারিজ করেছেন বিজেপির অবাঙালি সাংসদ অর্জুন সিং। যুক্তি দিয়ে অভিযোগ খারিজ করতে না পেরে তিনি অবশ্য আসানসোলের ‘বাঙালি’ সাংসদকে ‘বেইমান’ বলে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে বাবুলকে। তাই আর সহ্য করতে না পেরেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিয়েছেন বাবুল।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী আজ বিশাল বড় একটা বক্তব্য লিখেছেন। বাবুল লিখেছেন, যার ছত্রে ছত্রে রয়েছে বিজেপির কিছু সিদ্ধান্তের প্রতি অসন্তোষ ও রাজ্য নেতাদের অহং বোধ। যেমন বাবুল বলেছেন, কলেজে আমরা দুষ্টুমি করে একটা কথা বলতাম। সেটাতে একটু ‘দুষ্টু’ বাংলার প্রয়োগ থাকলেও না বলে পারছি না— ‘আপনি করলে লীলা আর আমরা করলে বিলা!’ এই তো মূল আদর্শের গল্প আপনাদের। আর চরম হাস্যকর হল, কংগ্রেস এবং বামপন্থীদের ‘বাঙালিদের সঙ্গে বঞ্চনার ইতিহাস’-এর প্রসঙ্গ এত কষ্ট করে জড় করে তার সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘বাঙালিপ্রীতির’ তুলনা করা! দুটো ‘ভুল’ জুড়ে দিলে যে একটা ‘ঠিক’ হয় না, সেটা জেনেও আপনাদের লেখাটা যে ব্যুমেরাং হয়ে যাচ্ছে সেটা বুঝছেন না। আরে বাবা, আপনাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ‘বাঙালিবিদ্বেষী’ দলগুলিও তো এখন বাংলায় প্রায় ইতিহাস! সেই ইতিহাসের সঙ্গে মাননীয় নরেন্দ্র মোদীজির তুলনা কেন করছেন? অতুল্য ঘোষের সঙ্গে বেইমানি করে যদি ইন্দিরা গাঁধীর ইনিংস শুরু করার কথা বলেন, তা হলে ২০১৪ থেকে যে মানুষটা রাস্তায়-রাস্তায়, গলিতে-গলিতে সামনে থেকে লড়াই করেছে, তার সঙ্গেও একই রকম অন্যায় করেছে বিজেপি! তাই তত্ত্বকথা বা আদর্শ তুলে রাখুন আপনাদের সিন্দুকে! আমার গ্রহণযোগ্যতা কী, সেটা আপনারা নন, মানুষ বলবে। মাত্র দু’দিন আগে আপনাদের সদ্য অপসারিত রাজ্য সভাপতি মাননীয় দিলীপ ঘোষ মহাশয় একটি ইন্টারভিউয়ে বাঙালিকে যে ভাবে অপমান করেছেন, ছোট করেছেন, তা শুনে সারা পৃথিবীর বাঙালি ক্ষুব্ধ। কতজন যোগ্য মানুষকে বিজেপি বসিয়ে রেখেছে, তা তো আপনারা নিজেরাও জানেন। তালিকা দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে যে সত্য কথাগুলি যখন বললে দলের উপকার হত, সেগুলি তখন না বলে ছোট ছোট জটলা, গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে নিজেদের স্বার্থে দলের চূড়ান্ত ক্ষতি করেছেন। আর নীচুতলার প্রকৃত বিজেপি কর্মীদের মন ভেঙে দিয়ে, দুঃখ দিয়ে, আপনাদের আদর্শের ‘জালে’ জড়িয়ে, যাকে যেখান থেকে পেরেছেন মুড়িমুড়কির মতো দলে নিয়েছেন এবং সেই কর্মীদের বা জেলার নেতাদের মাথার উপর বসিয়েছেন। তখন যে কেন আপনাদের লজ্জা করেনি (যেমন আপনারা বলছেন আমার হওয়া উচিত) কে জানে! ক্ষমতায় আসার লোভে? একমাত্র আমিই কিন্তু তখন সৎসাহস দেখিয়েছিলাম। মনে পড়ে?

কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির আইটি সেলকেও। ‘বিজেপি-তে আমার পুরনো সহকর্মী ও ‘বন্ধুগণ’, আমার বুধবারের একটি মন্তব্যের বিরুদ্ধে এক হাস্যকর সমালোচনা লিখে তারপর আপনাদের ‘সদাচঞ্চল’ সোশ্যাল মিডিয়া টিমকে দিয়ে তা ভাইরাল করিয়ে আমার বলা সত্য কথাটি মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়ার নির্বুদ্ধিতার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। সত্য কথা অপ্রিয়। তাই আমি জানি, আমি যা বলেছি সেটা আপনাদের গায়ে লেগেছে। প্রসঙ্গে এনেছেন একজন রাজনীতিবিদ না হয়েও দু’বার আসানসোলের মত আসনে ভোটে জেতা। বাবুল সেই প্রসঙ্গে বলেছেন, সাহস আছে বলেই অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০১৪-তে অনেকে লড়লেও একা আমিই আসানসোলে সকলকে সঙ্গে নিয়ে, বিজেপি-র বিবাদমান সব গোষ্ঠীকে একসঙ্গে এনে জিতেছিলাম। আমি জিতেছি, এটা জেনে বাংলার তৎকালীন বিজেপি প্রধান টিভি ক্যামেরার সামনে কী বলেছিলেন, তা মনে করলে এখনও অস্বস্তি হয়। রাগ হয়। কিন্তু তার পরেও মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছিলাম। তাই কোনও ‘কয়লা মাফিয়ার’ সাহায্য ছাড়াই ২০১৯-এ তিন গুণ ভোটে জিতেছিলাম।

আপনারা ভুলে গিয়েছেন যে, দলে আমারই তথাকথিত ‘শুভানুধ্যায়ী’-রা দিল্লিতে ‘সার্ভে রিপোর্ট’ পাঠিয়েছিলেন— বাবুল আসানসোলে বিপুল ভোটে হারবেন! আমাকে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা মনোনয়ন জমা দেওয়ার দু’দিন আগেও আসানসোল থেকে লড়তে বারণ করেছিলেন। শুনিনি। পালিয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় লড়ার পাত্র আমি নই। আসানসোলে মানুষের কাজ করেছি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হয়তো বিফলও হয়েছি। কিন্তু আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি এবং তা সেখানকার মানুষ কাছ থেকে দেখেছেন। তাই দু’লাখ ভোটে জিতব— একথা প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছি। আসানসোলের সংগঠনে আমাকে এবং ওখানে যাঁরা পার্টির জন্য ভাল কাজ করছেন, তাঁদের চূড়ান্ত ভাবে উত্যক্ত করার পরেও আমরা প্রায় দু’লাখ (১,৯৭,৬৩৭) ভোটেই জিতেছি। আমার মূল্যায়ন আসানসোল করেছে। আপনারা মূল্যয়ন করার কে? বাবুল নানান কথার মাঝে এও বলেছেন, ২০১৪ সালে বিজেপির হয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সকলের জন্য লড়েছেন যেমন। ঠিক তেমনই এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে একই ভাবে লড়াই করবেন।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

যাদবপুরে ১২ জন পড়ুয়ার ট্যাব কেনার টাকা ঢুকলো অন্যের অ্যাকাউন্টে.

কালিকাপুরে বিধ্বংসী আগুন, ঘটনাস্থলে ৫ ইঞ্জিন

উল্টোডাঙায় পথ দুর্ঘটনায় পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী, পাহাড় থেকে পরিবহনমন্ত্রীকে ফোন মমতার

ফের কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিকেলস আইন পুনর্বিবেচনা করার আবেদন বাস মালিকদের

আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে দেশের মোট ১২ জায়গায় ইডির হানা

সল্টলেকে দু’নম্বর গেটের সামনে দুটি বাসের রেষারেষিতে তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর