নিজস্ব প্রতিনিধি: চিন বাদে বিশ্বজুড়ে Covid প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু বিগত ৩-৪ বছরে সে যা তাণ্ডব চালিয়েছে বিশ্বের নানা দেশে তাতে করে তার প্রভাব কিন্তু আগামী কয়েক দশক ধরে এই বিশ্বে থেকে যাবে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয় সেটা কলকাতা(Kolkata) বা বাংলার(Bengal) দিকে তাকালেই বেশ চোখে পড়বে। খাস কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের আনাচেকানাচে নিত্যদিন এমন সব রোগীর সন্ধান মিলছে শয়ে শয়ে যাদের শরীরে কোভিডের থাবা সরে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে গিয়েছে। বিশেষত, হার্ট, ফুসফুস এবং মাংসপেশীতে। শুধু তাই নয়, এখন প্রায়শই দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়েই অকালেই ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ। কেউ Heart Attack-এ আবার কেউ Brain Stroke-এ। সেই সঙ্গে ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি, শ্বাসযন্ত্রের ওপর ও নীচের অংশে সংক্রমণ, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ার প্রকোপ। বেড়েছে অ্যালার্জি, হাঁপানির রোগীদের ভোগান্তিও। Muscle Pain সমস্যাও কাবু করছে অনেককে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এইসবই Post Covid Syndrome। কোভিডের বিষময় ফল।
আরও পড়ুন পাখির চোখে সংখ্যালঘু ভোট, বাংলায় রথে রাশ বিজেপির
কোভিডের জেরে আবহাওয়া এবং জীবজগতে বড়সড় চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে, যা খালি চোখে ধরা পড়বে না। কিন্তু তার সঙ্গে যুঝতে হবে সবাইকে। চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞদের অনুমান ও আশঙ্কা, কোভিড চিরস্থায়ী ছাপ ফেলেছে প্রত্যেকের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে। সেই কারণে বিশেষ করে হার্ট এবং ফুসফুসের অসুখ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছে বাংলা ও দেশজুড়ে। শুধু তাই নয়, হঠাৎ করে এত চিকেন পক্সে মৃত্যু, ছোটবেলার পুরনো অসুখবিসুখগুলি এত মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা—সবটাই Post Covid Syndrome-এর ফল। কীভাবে এর মোকাবিলা করা যায়, তার রাস্তা এখন খুঁজছেন তাঁরা। রাজ্যের নানা ল্যাবরেটরিতে সর্দি-কাশির কাতারে কাতারে নমুনা আসছে পরীক্ষার জন্য। তাতে কোনও না কোনও ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলছে। এমনকি H3N2 বা সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাবও চোখে পড়ছে রাজ্যজুড়ে। পাশাপাশি, রাইনো, অ্যাডেনো সহ প্রচুর ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে। আগে যেখানে পরীক্ষা করাতে আসা প্রতি ১০টি নমুনার মধ্যে ১-২টিতে কোনও না কোনও ভাইরাস মিলত, এখন সেখানে ৮-৯টি নমুনাতেই ভাইরাস মিলছে। ছোট ছোট বাচ্চারা পর্যন্ত ২-৩টি ভাইরাসে একইসঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন ১১ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জন্য গড়ছে মমতার সরকার
বিশেষজ্ঞদের এটাও দাবি যে, রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের আউটডোরে জ্বর-সর্দি-কাশি-গলা ব্যথার সমস্যা নিয়ে এখন নিত্যদিন মিছিল লেগে থাকতে দেখা যাচ্ছে। প্রাণঘাতী হার্টের অসুখ ও হার্ট অ্যাটাক বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের Heart Attack ও Brain Stroke বেড়ে গিয়েছে বহুলাংশে। এসবের সঙ্গে কোভিডের যোগ কতটা তা চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন। কিন্তু আশেপাশে যা কিছু অস্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে, তার সঙ্গে কোভিডের যে কোথাও না কোথাও যোগসূত্র আছে সেটা তাঁরা নিশ্চিত। তাই বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক, তা একবাক্যে বলছেন ও মানছেন তাঁরা।