নিজস্ব প্রতিনিধি: আগেই জানা গিয়েছিল শাহি সফরকালে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে(Suvendu Adhikari) নিয়ে নালিশ জানাতে পারে বঙ্গ বিজেপির একাংশ। সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই নালিশ জানানোও হয়েছে। সেই সব নালিশ শুনে এবং বাংলায় দলের হাল দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির নম্বর টু নেতা অমিত শাহ(Amit Shah)। কার্যত নালিশ শুনে আর দলের বেহাল অবস্থা দেখে তিনি নাকি শুভেন্দুকে বেশ কড়া বার্তাই দিয়েছেন, অন্তত বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। এমনকি জানা গিয়েছে, সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) যাতে কেন্দ্র সরকার বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী(Central Force) পাঠিয়ে ভোট করানোর ব্যবস্থা করে তার জন্য নাকি শাহের কাছে আবদার করেছিলেন শিশিরপুত্র। কিন্তু সেই আবদারে মজেননি শাহ। বরন্স কড়া ভাবে জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর ভরসায় ভোটে লড়াই করা যায় না। ভোটে লড়াই করতে হবে দলের সংগঠন তৈরি করেই। শাহের দিক থেকে শুভেন্দুর এই ধাক্কায় কার্যত খুশি বঙ্গ বিজেপির শুভেন্দু বিরোধীরা।
আরও পড়ুন জাতীয় সড়কের জন্য অধিগৃহীত জমির ক্ষতিপূরণ চাপছে রাজ্যের ঘাড়ে
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে নিউটাউনের এক হোটেলে দলের কোর কমিটির সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকে বসেছিলেন অমিত শাহ। সেখানেই কার্যত শুভেন্দুকে কড়া বার্তা দেন শাহ। সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে দলের নিচুতলার সংগঠন নিয়ে রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয় শাহের হাতে যা দেখে রীতিমত অসন্তুষ্ট হন তিনি। তার জেরে শুভেন্দুকে তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, খাতায়-কলমে নয়, বাস্তবে সংগঠন গড়ে দেখাতে হবে। ২০১৯’এর লোকসভা ভোটে যে সাফল্য এসেছিল সেই ভোটব্যাংক ধরে রাখতে হবে। বামেরা যেন কোনওভাবেই ‘অ্যাডভান্টেজ’ না পায় তা দেখতে হবে। পাশাপাশি বলেছেন, পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে বুথ তৈরি করলে তার লাভ লোকসভা ভোটে পাওয়া যাবে। তাই বুথ শক্তিশালী না করলে সাফল্য আসবে না। নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির ওপর ভরসা করতে হবে। সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। জনসংযোগ বাড়াতে প্রত্যেককে প্রতিটা পরিবারের কাছে পৌঁছনোর বার্তাও দিয়েছেন শাহ। সাংসদ-বিধায়ক ও দলীয় নেতৃত্ব সকলকে একসঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে বলেও জানিয়ে দেন শাহ। লোকসভায় কীভাবে আসন বাড়ানো সম্ভব, তা হিসেব কষে বুঝিয়েও দেন। পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে অন্য দলের কর্মীদেরও নিয়ে আসার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, বঙ্গ বিজেপির সংগঠন বাড়াতে অন্য দলের কর্মীদের যোগদান করানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি, এমনটাই সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন ভাইঝিকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার দুই কাকা
দলের অন্দরে অমিত শাহর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুনীল বনশল এবং মঙ্গল পাণ্ডে। এই দু’জনকেই বাংলার পর্যবেক্ষক করেছেন তিনি। জেলায় জেলায় ঘুরে পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন সুনীল ও মঙ্গল। বঙ্গ বিজেপির সংগঠনে কোথায় গলদ রয়েছে, তার রিপোর্ট শাহকে দেন এই দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের সংগঠনকে মজবুত করতে সংগঠন নিয়ে যে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেঁধে দিয়েছিল তা যে পূরণ করতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব সেটাও ওই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়। বুথ স্তরের কমিটি ও সংঠন গড়তে যে বঙ্গ বিজেপি ব্যার্থ সেটাও তুলে ধরা হয়। সেই সব শুনে আর দেখে শাহ কার্যত শুভেন্দু সহ গোটা বঙ্গ বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়ে দেন, নিজেদের জোরে লড়তে হবে। সবক্ষেত্রে দিল্লির ওপর ভরসা করলে হবে না। সব থেকে কড়া বার্তা তিনি দিয়েছেন শুভেন্দুকেই। ভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের বিজেপিতে টানতে বললেও বাম-কংগ্রেসকে জমি ছাড়তে বারণ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে দলের সবাইকে নিয়ে চলতেও বলেছেন।