নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্য ঘিরে গত দু’দিন ধরেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হাওড়া(Howrah) জেলার বিভিন্ন এলাকার। শনিবারও সেই পরিস্থিতির বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। শনিবার সকাল থেকে জ্বলছে হাওড়ার পাঁচলা(Panchla)। অভিযোগ, একাধিক বাড়ি, দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কার্যত তাণ্ডব চালানো হয়েছে। ঘরছাড়া বহু মানুষ। শুক্রবারও একই ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাঁচলা। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে ফের একটা দলের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) শনিবার টুইট করে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এবার হাওড়ায় অশান্তির ঘটনায় উত্তেজনাময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আরও কড়া পদক্ষেপ করল নবান্ন। দুই এডিজি পদমর্যাদার আধিকারিকের নেতৃত্বে ১০ জনের শীর্ষ আধিকারিককে নিয়ে বিশেষ দল(Special Team) তৈরি করল রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। ওই ১০ জন শীর্ষ আধিকারিককে এদিনই ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে হঠাৎ করেই পাঁচলা বাজারে হামলা চালায় এক দল লোক। একাধিক বাড়ি, দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোনও কারণ ছাড়াই ভাঙচুর করা হয় একের পর এক বাড়ি ও দোকান। উঠেছে বোমাবাজির অভিযোগও। ভয়ে এলাকা ছাড়েন কয়েকশো বাসিন্দা। যারা এখনও নিজেদের বাড়িতে রয়েছেন তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই এদিন সকালে হামলা চালানো হয়েছে। কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। নির্বিচারে লুঠপাট, ভাঙচুর, আগুন লাগানো হয়েছে। ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পরে এলাকায় পৌঁছায় দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন। ততক্ষণে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বহু বাড়ি। গতকালের মতো এদিনও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ারও অভিযোগ উঠেছে। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ।
এই অবস্থায় এদিন নবান্নে রাজ্য পুলিশের(Police) এডিজি নীরজ কুমার সিংয়ের নেতৃত্বে একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। সেই দলে থাকছেন আইপিএস নিশাথ পারভেজ, ডিআইডি সিআইডি (অপারেশন) মীরাজ খালিদ, ডিআইজি (সীমান্ত) আইবি সুমনজিৎ রায়, আইপিএস অঞ্জলি সিং, এসপি সিআইএফ হোসেন মেহেদি রহমান ও আইপিএস অজিত সিং যাদব। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারকিতে থাকবেন এডিজি ইবি অজয় কুমার, ডিআইজি সিআইডি (স্পেশাল) কল্যাণ মুখোপাধ্যায়, ডিআইজি (এপি) দুর্গাপুর ফারহাত আব্বাস, আইপিএস চন্দ্রশেখর বর্ধন ও আইপিএস অনামিত্র দাস। এখন দেখার বিষয় রাজ্য পুলিশের এই বিশেষ বাহিনী গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন কিনা।