নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriya Mallik) রেশন বন্টন দুর্নীতির ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED বা Enforcement Directorate’র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। গতকালই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ED। আবার গতকালই রাজ্যের রেশন বন্টন ব্যবস্থার(Ration Distribution System) প্রশংসা করে নবান্নকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কার্যত রেশন বন্টন দুর্নীতির প্রশ্নে যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারকে ক্লিনচিট দেওয়ার সামিল। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে এখন মুখ পুড়ছে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) নেতাদের। রেশন বন্টন দুর্নীতির ঘটনায় যখন বঙ্গ বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে ঠিক তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের সেই রেশন বন্টন ব্যবস্থার প্রশংসা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়ে কার্যত কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার(Narendra Modi Government) বঙ্গ বিজেপির মুখ পুড়িয়ে দিল। তাঁদের চূড়ান্ত অস্বস্তিতেও ফেলে দিল।
রাজ্যের রেশন ব্যবস্থার প্রশংসা করে কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যে রেশন বিলি প্রক্রিয়া মসৃণ করতে যেভাবে সমস্ত কার্ড Digitalized করার দিকে গিয়েছে মমতার সরকার তা ভূয়ষী প্রশংসার যোগ্য। তার সঙ্গে আরও একটি দিক উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কোন মাসে কতটা রেশন বিলি হল, কতটা বাকি থেকে গেল, সেই বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্র সরকারের পোর্টালে তুলে দেওয়া সঠিক ভাবে। কেননা এই কাজে ফাঁক থাকলে পরের মাসের খাদ্যসামগ্রী পাঠায়ই না কেন্দ্র। প্রশংসার সেই চিঠিতে কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রত্যেক মাসে নির্ভুলভাবে সেই তথ্য জানাতে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য দফতর নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই দিল্লিতে খাদ্য মন্ত্রকের একটি সম্মেলনে গিয়েছিলেন এ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। সেখানে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও ছিলেন। রাজ্যের বিপুল চাহিদা ও তার মোকাবিলায় সুষ্ঠু বিলি-বণ্টন নিয়ে রাজ্যের যাবতীয় প্রক্রিয়ার কথা শুনে সেই সম্মেলনেই মৌখিক প্রশংসা করেছিলেন পীযূষ গোয়েল। এরপর এল চিঠি।
কেন্দ্রের পাঠানো প্রশংসার চিঠিতে জানানো হয়েছে, হাতেহাতে রেশন সামগ্রী বিলির বদলে গোটা প্রক্রিয়াকে যেভাবে রাজ্য Digitalized করেছে তাতে বাংলার নিরলস পরিশ্রমের ছবি উঠে এসেছে। কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে সেই কাজে উদ্যোগী হয়েছে। হাতে হাতে বা Manual Distribution কোথাও হচ্ছে কি না, তা কেন্দ্রের ‘অন্নবিতরণ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। মে মাস থেকে তার মাধ্যমেও বিলি ব্যবস্থায় নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের যে পোর্টালের কথা বলা হয়েছে, সেখানে প্রতি ৩ মাসের হিসাব তথ্য সহকারে জানাতে হয়। তাতেও বাংলার ভূমিকা প্রশংসাসূচক। রাজ্যে এই মুহূর্তে ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের KYC-ও হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রের এই ভূয়ষী প্রশংসায় শুধু যে বঙ্গ বিজেপির মুখ পুড়ছে তাই নয়, এ রাজ্যের মমতা ও তৃণমূল বিরোধীদেরও মুখ পুড়ছে।