নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election) আগামী বছরের মে মাসে হওয়ার কথা। কিন্তু সেই নির্বাচন যে এগিয়ে আসছে তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই একাধিকবার দিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। নবান্ন সূত্রেও জানা গিয়েছে চলতি বছরের শেষ দিকেই এই নির্বাচন করানোর কথা ভাবছে রাজ্যের শাসক দল। জগদ্বাত্রী পুজো মিটলেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন(State Election Commission) এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিতে পারে বলেই জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বর মাসেই পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সেই লক্ষ্যেই এবার বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) অন্দরে শুরু হয়ে গেল প্রার্থী বাছাইয়ের পালা। রাজ্যের ২০টি জেলায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত – এই ৩টি স্তরের মোট ৭৭ হাজার আসনে এবার প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে শাসক দল। এই প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবারে সব থেকে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বিষয়টি। নির্বাচনে তুলে আনা হবে শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম ও মহিলাদের।
বাংলার বুকে তৃণমূলের অন্দরে এখন ৩৫টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এই সব জেলাগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চলতি মাসে সভাপতি বদল করা হয়েছে। বদল করা হয়েছে ব্লক স্তরের সভাপতিও। সেও সঙ্গে তৃণমূলের অনান্য সংগঠনেও বদল আনা হয়েছে। এবার এই সব স্তর থেকেই নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক তথা দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। শীর্ষ নেতৃত্বের ‘নির্দেশ’ বুথ স্তর থেকে জেলা সংগঠন পর্যন্ত সঠিক ভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা এই রিপোর্টের মাধ্যমে যাচাই করে নিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। দু’সপ্তাহ অন্তর জেলা কমিটিকে বৈঠক করে সেই রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। তবে এর পিছনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভই আসল লক্ষ্য বলে অনেকেই মনে করছেন। পঞ্চায়েত ভোটে ৭৭ হাজার আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে তৃণমূল। আর সেই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে দলের জেলা সভাপতিদের নিজস্ব মতামতও দিতে বলেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। জেলা সভাপতিদের মতামত শুনে আর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া নিয়মিত রিপোর্টের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল সাজাতে চান অভিষেক। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে তৃণমূলের অন্দর থেকে।
যদিও সংগঠনকে বুথ স্তর থেকে শক্তিশালী করতে হবে বলে অভিষেক দলের নেতাদের বার্তা দিলেও, তা৬র পাখির চোখ যে পঞ্চায়েত নির্বাচন নয় সেটা অনেকেই বুঝতে পারছেন। তাঁদের ধারনা ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে যে ধাক্কা রাজ্যের শাসক দল খেয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি আর চাইছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই লক্ষ্যেই এখন থেকে দলের সংগঠনকে সাজিয়ে নিতে চাইছেন অভিষেক। যাতে কোনও ভাবেই ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি বাংলা থেকে বেশি আসন বার করতে না পারে। ২০১৯ সালে দলের শ্লোগান ছিল ৪২ – ৪২। সেই লক্ষ্য সেবার ছুঁতে পারা না গেলেও ২০২৪ সালে এই শ্লোগানকে বাস্তবায়িত করার চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন অভিষেক। কেননা বাংলা থেকে বিজেপির ১৮টি আসন কমে গেলে তা যেমন মোদি-শাহের কাছে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠবে তেমনি কেন্দ্রে ফের সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাবে।