নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বুধবার অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর কলকাতায়(Kolkata) পা রাখতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানে কলকাতায় আসবেন শাহ। ১১টা ৫ মিনিটে দিল্লি থেকে উড়বে তাঁর বিশেষ বিমান। কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তা পৌঁছবে বেলা সওয়া ১টা নাগাদ। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে রেসকোর্সের রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ কোর্সে নামবেন তিনি। সেখান থেকে তিনি গাড়ি করে আসবেন ধর্মতলায় বিজেপির সভা মঞ্চে। পৌনে ২টো নাগাদ সভামঞ্চে পৌঁছনোর কথা তাঁর। ধর্মতলার প্রতিবাদ সভায় ৩টে ১৫ মিনিট পর্যন্ত থাকার কথা শাহের। সভায় বক্তৃতা সেরে তার পর ফের দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। যে ভাবে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আসবেন। সেই ভাবেই কলকাতা বিমানবন্দরে ঢুকবেন ৩টে ৪০ মিনিটে। এর পর ৩টে ৪৫ মিনিটে তাঁর বিমান দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দিল্লিতে পৌঁছে যাবেন তিনি। শাহ আসছেন ঠিকই, কিন্তু বঙ্গ বিজেপিরই নেতাদের একাংশের দাবি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন বাংলা(Bengal) থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।
কেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন? বঙ্গ বিজেপির নেতাদের দাবি, একুশের ভোটের পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে বাংলার মাটিতে বিজেপি(BJP) যে একের পর এক নির্বাচন হেরে চলেছে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি। তাঁদের এটাও চোখে পড়েছে যে, নিত্যদিন এখানে দল ছাড়ছেন নীচুতলার নেতা থেকে কর্মীরা। দল ছাড়ছেন সাংসদ থেকে বিধায়কেরাও। দলের রাজ্য নেতৃত্ব এদের ধরে রাখতে পারছেন না। দলকে কোনও ভোটে জয়ের মুখও দেখাতে পারছেন না। বাংলার অর্ধেক বুথে দলের কার্যত কোনও সংগঠনও নেই। দলের পুরাতন ও আদি কর্মীদের একটা বড় অংশই বসে গিয়েছেন। যারা সক্রিয় তাঁদের মধ্যে আবার গোষ্ঠীকোন্দল তুঙ্গে উঠেছে। সব থেকে বড় কথা বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অনেক বড় বড় কথা বললেও তার কোনও বাস্তবায়ন বাংলার মাটিতে দেখতে পাচ্ছেন না দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কার্যত তাঁরা বুঝেই গিয়েছেন, ২৪’র ভোটে বাংলা থেকে ১টিও লোকসভা আসনে দলের প্রার্থীরা জয়ী হবেন না। আর এই কারণেই তাঁরা বাংলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
বাংলা থেকে যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন তার প্রমাণ হিসাবে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, মোদি থেকে শাহ, মায় নাড্ডাও বাংলা নিয়ে তাঁদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। রাজনৈতিক ভাবে এখানে তৃণমূলের(TMC) বিরোধিতা করতে হবে, তাই তাঁরা তা করছেন, মাঝে মধ্যে আসছেন, কিন্তু সেভাবে আগ্রহ আর নেই। এর সব থেকে বড় প্রমাণ হল বাংলার সাংসদরা সহজেই দিল্লি গিয়ে শাহর সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। ইদানীং তিনি সময় দিতেই চান না। এমনকী, নাড্ডাজির অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতেও বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়। এমনকি কথা হয়েছিল, প্রতি মাসে একবার করে রাজ্যে আসবেন শাহ এবং নাড্ডা। তাঁরা সে কথা রাখেননি। কেন রাখেননি? আগ্রহ হারিয়ে ফেললে রাজনীতিতে কেউ কী আর কোনও কথা রাখে! যদিও বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি, ২৯ তারিখের সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অলআউট খেলার বার্তাই দেবেন শাহ। অপর গোষ্ঠীর দাবি, বার্তা হয়তো দেবেন, কিন্তু সেই বার্তায় সেভাবে কোনও ঝাঁঝ থাকবে না।