নিজস্ব প্রতিনিধি: পুলিশ পরিচয় দিয়ে বুধবার রাতে অপহরণ করা হয় এক ব্যবসায়ীকে। তাও খাস কলকাতায়(Kolkata)। কসবার অ্যাক্রোপলিস মলের কাছ থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বসিরহাটের ওই ব্যবসায়ী(Businessman) তথা বেশ কিছু ইটভাটার মালিককে গাড়ি করে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। চাওয়া হয় মোটা টাকার মুক্তিপণও। সেই অভিযোগ থানায় দায়ের হতেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়ে কলকাতা পুলিশ(Police)। বাহিনীর প্রধান তথা কলকাতা পুলিশের সিপি বিনীত গয়াল নিজে লালবাজারে এই নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠক শেষ করেই কলকাতা পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখার প্রধান মুরলিধর শর্মা পৌঁছে যান কসবা থানায়। এরপর লালবাজার ও কসবা থানা যৌথ অভিযানে নামে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করতে। তার জেরেই বৃহস্পতিবার ভোররাতেই টালিগঞ্জ থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে লালবাজারের গুণ্ডাদমন শাখা।
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটের বাসিন্দা বছর ৩৮’র কুতুবউদ্দিন গাজি বুধবার ব্যবসার কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরার সময় কসবার(Kasba) অ্যাক্রোপলিস মলের কাছে রাত ৮টা নাগাদ চক্রবর্তী পাড়ায় তাঁর অফিস থেকেই পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতী তাঁকে অপহরণ(Kidnapped) করে। তারপরেই মোটা টাকার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন যায় তাঁর পরিবারে। যদিও সেই মুক্তিপণের পরিমাণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মধ্যে এই ব্যবসায়ী অপহরণের বিষয়টি ভাল চোখে নেয়নি রাজ্য প্রশাসন। আর তার জেরেই খোদ কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে মাঠে নামতে হয়। তিনি রাতভর লালবাজারে থেকে ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের বিষয়টি তদারকি করেন। সেই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখার প্রধান মুরলিধর শর্মা নিজে পড়ে থাকেন কসবা থানা এলাকায়। সেই সঙ্গে আশপাশের থানাগুলিকে সতর্ক করে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারে নামে পুলিশবাহিনী। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়ির নম্বর চিহ্নিত করে গাড়ি মালিকের সন্ধানও মেলে রাতের মধ্যেই।
শেষে সেই অভিযানেই বৃহস্পতিবার ভোররাতেই টালিগঞ্জ এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীকে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৭জনকে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এটাও জানতে পেরেছে যে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার সময়ে দুষ্কৃতীরা পুলিশের পোষাক পরেছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যবসায়ীর থেকে কিছু টাকা পেতেন অপহরণকারীরা। সেই টাকা ফেরত পেতেই অপহরণ করা হয় তাঁকে। অপহরণ-কাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি গাড়িকেও উদ্ধার করা হয়। তবে বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মাঝে এই ঘটনা ঘটায় এখন পুলিশ এটাও খতিয়ে দেখছে যে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ করার লক্ষ্যে বা শিল্পপতিদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দিতে এই অপহরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা। সেক্ষেত্রে এই ঘটনার তদন্তের জাল আরও দূরে গড়াতে পারে।