এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

শীতের ভ্রমণ: ইতিহাস, স্থাপত্য এবং জলপ্রপাতের খোঁজে সাসারামে

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঙালির কাছে সেই প্রাচীন কাল থেকেই স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জায়গা হল শিমুলতলা। যা লোকমুখে বিহারের শিমলা হিসেবে পরিচিত হয়ে যায়। এই শিমুলতলা যারা ঘুরতে যাবেন, তাঁরা একদিন রাখুন সাসারামের জন্য, ঠকবেন না। ইতিহাস এখানে কথা বলে। চলন্ত ইতিহাসের শহর সাসারাম, তবে প্রকৃতিও এখানে অকৃপণ নয়। রীতিমতো উজার করে দিয়েছে নিজেকে। তবুও কেন সাসারাম ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় হয়নি সেটা রাজনীতির বিষয়। তবে চাইলেই একদিনে ঘুরে আসতে পারেন সাসারাম। এখানেই জন্মেছিলেন ভারত শাসন করা শের শাহ সুরি। যিনি জি টি রোড তৈরি করিয়েছিলেন। এই জি টি রোডের ধারেই প্রাচীন শহর সাসারাম। এখানে শেরশাহর মকবরা ছাড়াও দেখার অনেক কিছু আছে। একটি পরিত্যাক্ত কেল্লা আছে। আশেপাশেই দেখবেন প্রচুর জলপ্রপাত ও প্রাচীন মন্দির।

সাসারামের মূল আকর্ষণ অবশ্যই শের শাহর মকবরা। বিশাল জলাশয়ের মাঝে একটি কৃত্তিম দ্বীপ। সেখানেই অবস্থিত শের শাহ সুরির কবর বা মকবরা। আটকোনা ও দোতলা এই স্থাপত্য সত্যিই মুগ্ধ করবে আপনাকে। দুটি তলের প্রতিটি কোনায় একটি ছত্রি, সবমিলিয়ে ষোলোটা। সবার উপরে একটি গম্বজ, যার ব্যাস ২০ মিটার। জলের উপর দিয়ে সাঁকোর মতো বাধানো হাঁটাপথ রয়েছে। ভিতরে শেরশাহ ছাড়াও আরও কয়েকটি কবর রয়েছে। মকবরাটি তিনদিকে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। শেরশাহ মকবরা দেখে চলে আসুন তাঁর ছেলে ইসলাম শাহ-র অর্ধসমাপ্ত মকবরা দেখতে। এটি বড় রাস্তার অন্যপাড়ে অবস্থিত। শোনা যায় এটি আরও বড় আকারে তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই বর্তমানে মকবরা ও জলাশয়টির অবস্থা করুণ।

এবার দেখে নিন হাসান শাহর মকবরা। আটদিকে তিনটি করে মোট ২৪টি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। এটিও দোতলা মকবরা। দুটি তলের চারদিকে তিনটি করে ছোট গম্বুজ। দ্বিতীয় তলের উপর বড় গম্বুজ আকৃতির ছত্রি। এটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এই তিনটি মকবরা যিনি তৈরি করেছিলেন। সেই অসামান্য স্থপতি আলিওয়াল খানের তৈরি আরও একটি মকবরা সাসারামে আছে। সেটিও তিনিই তৈরি করেছিলেন নিজের জন্য। এছাড়া আরেকটি পরিত্যাক্ত কেল্লা আছে সাসারামে।

তবে বিহারের সাসারাম আজ বিখ্যাত তাঁর অসামান্য কয়েকটি জলপ্রপাতের কারণে। যা বর্তমানে জনপ্রিয় হয়েছে ফেসবুকের কল্যানে। সাসারামের সীতাকুন্ড, মাঁঝেরকুন্ড, ধোঁয়াকুন্ড, তুতলাভবানী কিনবা কাশিস জলপ্রপাত দর্শন করতে পারেন প্রাণ ভরে। সাথে সাথে সাসারামের পাশে ভাবুয়া রোড অঞ্চলে আরও দুটো জলপ্রপাত দেখে নেওয়া যায় একদিনের ট্রিপে। সেক্ষেত্রে, প্রথম দিন সাসারামের স্থাপত্য ও কয়েকটি জলপ্রপাত দেখে নিতে পারেন। সীতাকুন্ড, মাঁঝেরকুন্ড, ধোঁয়াকুন্ড ছাড়াও দেখে নিতে পারেন পাইলট বাবা মন্দির। দ্বিতীয় দিনে ঘুরে আসুন মা তারা চণ্ডী মন্দির ও তুতলাভবানী মন্দির। সেখানেই আছে এক অসামান্য জলপ্রপাত। কিছুটা দূরেই দেখে নিন কাশিস জলপ্রপাত।

তৃতীয় দিনে সাসারাম থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে ভাবুয়া রোড চলে যান। সেখানে দেখুন মা মুন্ডেশ্বরী কালী মন্দির, এটি দেশের প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে দেখতে পারেন বক্তাতিয়ার খাঁয়ের মকবরা। তবে ভাবুয়া রোডের মূল আকর্ষণ হল টেলহারকুন্ড জলপ্রপাত এবং কারকাটগড় জলপ্রপাত। দুটিই কম জনপ্রিয় এবং অসাধারণ লোকেশনে। কাইমুর ওয়াইল্ডলাইফ পার্কের কাইমুর হিলে টেলহারকুন্ড জলপ্রপাত, উচ্চতায় যেমন বিশালত্ব তেমনই সৌন্দর্য।

অনেকটা উঁচু থেকে নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ছে নীল জলরাশি। সামনাসামনি ভিউ পাওয়া না গেলেও নয়নাভিরাম এই জলপ্রপাত। অন্যদিকে কারকাটগড় জলপ্রপাত একটু কঠিন। কারণ রাস্তা খুবই খারাপ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেভাবে কাজ করে না। কিন্তু কাছে গিয়ে থমকে যেতে বাধ্য হবেন। প্রায় ৮০ ফুট নিচে জল কুণ্ডে পড়ে অসাধারন সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে কারকাটগড় জলপ্রপাত। ফলে যারা অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় বাইকে দূরে ঘুরতে যান তাঁদের জন্য সাসারাম আদর্শ।


কীভাবে যাবেন?

হাওড়া ও শিয়ালদা থেকে ছাড়া মোগলসরাই হয়ে দিল্লিগামী অনেক ট্রেনই সাসারাম দাঁড়ায়। সময় লাগে আট থেকে দশ ঘণ্টা। জি টি রোড ধরে সড়ক পথেও সাসারাম যাওয়া সোজা। স্টেশনের আশেপাশে এসি-নন এসি প্রচুর হোটেল আছে। আগস্ট মাঝামাঝি থেকে থেকে অক্টোবর মাঝামাঝি পর্যন্ত গেলে জলপ্রপাত গুলোয় জল পুরোদমে থাকে। 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ঘুম আসছে না ? ৫ রকমের রোগ বাসা বাঁধে নি তো?

লাঞ্চে রুটি খাচ্ছেন! এই উপায়ে ভাত খেলে ওজন থাকবে বশে

বুদ্ধ পূর্ণিমায় বুদ্ধকে পায়েস নিবেদন করা হয় কেন ?

টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় সিট সোজা রাখতে বলা হয় কেন?

কাজের চাপে মেজাজ হারাচ্ছেন! নিজেকে শান্ত রাখবেন কী করে?

বয়স ৩০ হলে ভুলেও এই ৫ টি খাবার ছোঁবেন না!

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর