নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতায় যেমন দুর্গাপুজো, তেমনই বারাসতে কালীপুজো, চন্দনগরে জগদ্ধাত্রী, চুঁচুড়ায় কার্তিক এবং কালনায় সরস্বতী পুজোর কথা আমরা সকলেই জানি। প্রত্য়েকটি এলাকাই সেই সব পুজোর জন্য বিখ্য়াত। কিন্তু কখনও মনে আসেনি কোন এলাকা বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজোর জন্য বিখ্য়াত? জানুন, কলকাতার খুব কাছেই এক বর্ধিষ্ণু গ্রামে ২৫০টিরও বেশি বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো হয়। আর সেটা কলকাতার দুর্গাপুজোকেও হার মানাতে পারে জাঁকজমকে। হাওড়ার জয়পুরের খালনা গ্রাম এই লক্ষ্মীপুজোর জাঁকজমকের কারণে আজ ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ নামেই পরিচিত হয়ে গিয়েছে। এখানে বিজয়া দশমী কাটলেই শুরু হয়ে যায় সাজ সাজ রব। লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে গোটা গ্রাম এবং আশেপাশের এলাকাতেই উৎসবেব রূপ নেয়।
এখানকার বেশিরভাগ লক্ষ্মীপুজোই কিন্তু ১০০-১৫০ বছরের প্রাচীন। ফলে ঐতিহ্য কোনও অংশে কম নয় কলকাতার দুর্গাপুজো থেকে। বলা ভালো, খালনা গ্রামের লক্ষ্মীপুজো অক্লেশেই টেক্কা দিতে পারে কলকাতাকে। হাওড়া জেলার বাগনান রেল স্টেশন থেকে মাত্র ১৯ কিমি দূরে খালনা গ্রাম। যাকে এক ডাকে ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ বলে এক ডাকে চেনে গোটা হাওড়া। যদিও কয়েকটি পুজো কমিটি দাবি করেন তাঁদের পুজো ৩০০ বছরের প্রাচীন। যদিও ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় প্রায় ১৫০ বছর আগে এই গ্রামে লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়েছিল। এরপর থেকে বংশ পরম্পরায় পুজো হয়ে আসছে মা লক্ষ্মীর। এ গ্রামের চারুময়ী লক্ষ্মীতলা, কৃষ্ণরায়তলা ক্ষুদিরায়তলার পুজো সুপ্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত। শুধুমাত্র খালনা গ্রামেই দেড়শোর বেশি বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো হয়। যারমধ্যে ৩৫-৪০টি বড় বাজেটের পুজো।
খালনা গ্রামে লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলাও বসে। আর বারোয়ারি পুজোগুলি লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পুজো করে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঐতিহ্যের পাশাপাশি থিমের চমক জায়গা করে নিয়েছে খালনা গ্রামে। গত বছর করোনা নিষেধাজ্ঞায় নমো নমো করেই পুজো সেরেছিলেন বেশিরভাগ পুজো কমিটি। এবার ফের স্বমহিমায় ফিরতে চলেছে খালনা গ্রাম। জানা যায়, খালনার সবচেয়ে প্রাচীন লক্ষ্মীপুজো হয় ক্ষুদিরামতলা সর্বজনীনে। যা ১৫৫ বছরে পড়ল। এছাড়া আছে কালীমাতা তরুণ সঙ্ঘ, আনন্দময়ী তরুণ সঙ্ঘ, মিতালি সঙ্ঘ, আমরা সবাই, রাজবংশী পাড়া সর্বজনীন, খালনা হরিসভা, এ টু জেড ক্লাব প্রভৃতি।